রংপুরের তারাগঞ্জে নবম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন করায় কনের বাবা ও বরকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ১৮ বছর বয়সের আগে মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। শনিবার (২ মার্চ) দুপুরে তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে শুক্রবার (১ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বৈদ্যনাথপুর পোস্ট অফিসপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৈদ্যনাথপুর পোস্ট অফিসপাড়া গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। তার সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল পাশের পশ্চিম রহিমাপুর গ্রামের মৃত দারাজ উদ্দিনের ছেলে নওয়াব আলীর (২০)। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে বরযাত্রীও চলে আসে। এ সময় বাল্যবিবাহের খবর পান ইউএনও রুবেল রানা। এরপর ইউএনও সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই ছাত্রীর বাবাকে ৫ হাজার টাকা ও বর নওয়াব আলীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সঙ্গে ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত ওই মেয়েকে বিয়ে দেবে না মর্মে মুচলেকা নেওয়া হয়।

ইউএনও রুবেল রানা বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৈদ্যনাথপুর পোস্ট অফিসপাড়া গ্রামে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানতে পারি। পরে সেখানে উপস্থিত হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ এর আওতায় মেয়ের বাবাকে ৫ হাজার ও বরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন মর্মে মেয়ের মা-বাবা মুচলেকা দেন। 

মেয়ের বাবা বলেন, ভুল বুঝে অল্প বয়সে মেয়েটার বিয়ে দিচ্ছিলাম। ইউএনও সাহেব আমার চোখ খুলে দিয়েছেন। বুঝিয়েছেন অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে দিলে কী ক্ষতি হয়। তাই বিয়ে ভেঙে দিয়েছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে উপযুক্ত বয়সে বিয়ে দেব। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর