নাটোরের গুরুদাসপুরে নিখোঁজের দুই বছর পর মফিজুল ইসলাম নামে এক যুবকের পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (৩ মার্চ) আদালতের নির্দেশে উপজেলার চাঁচকৈড় এলাকার একটি মাদরাসার সেপটিক ট্যাঙ্কের পাশ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। 

এর আগে জেল ফেরত এক ব্যক্তির তথ্যে তাকে হত্যার বিষয়টি জানতে পারেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর শুক্রবার রাতে নিহত ওই যুবকের মা মাইনুর বেগম গুরুদাসপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার ভেতর র‍্যাব-৫ এর একটি দল শনিবার সিরাজগঞ্জের গোলচত্বর এলাকা থেকে আশরাফুল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে।

রোববার দুপুরে মরদেহ উত্তোলনের খবর পেয়ে এলাকার শত শত উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। এর আগে খুনের ঘটনা প্রকাশ ও নিশ্চিত হওয়ার পর শনিবার থেকে এলাকাটি ঘিরে রাখে পুলিশ সদস্যরা। 

মরদেহ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদি হাসান শাকিল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এটিএম মইনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শরিফুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (সিংড়া সার্কেল) আক্তারুজ্জামান, গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জ্বল হোসেন প্রমুখ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল গুরুদাসপুর পৌরসভার খলিফাপাড়ার মফিজুল ইসলাম (২৫) নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পর মফিজুলের মা থানায় একটি জিডি করেন।

এদিকে  স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় জেলে যান মো. আল হাবিব সরকার (২৫) নামে এক যুবক। জেল হাজতে হাবিব সরকারের সঙ্গে গুরুদাসপুরের খলিফাপাড়ার আরেক বন্দি মো. জাকির মুন্সির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। এরপর জাকির মুন্সিকে আসামি হাবিব সরকার তার স্ত্রীর পরকীয়া ও পরকীয়া প্রেমিককে হত্যার পর মরদেহ গুমের কথা বলেন। জাকির মুন্সী গত সপ্তাহে জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে বিষয়টি মফিজুল ইসলামের মাসহ এলাকার অন্যান্য লোকজনের কাছে বলে দেন। এ ঘটনা জানাজানির পর মফিজুলের মায়ের করা মামলায় মাদরাসার নৈশপ্রহরী আবু তাহের খলিফা (৫৫), তার মেয়ে তানজিলা (২৮) ও তাদের স্বজন আশরাফুল ইসলামকে (৪২) গ্রেপ্তার করে র‍্যাব ও পুলিশ। আর তানজিলার স্বামী আল হাবিব সরকার (৩৫) আগে থেকেই কারাগারে রয়েছে।

গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জ্বল হোসেন জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

গোলাম রাব্বানী/আরকে