ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে লড়েছেন পাঁচ প্রার্থী। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ তিনজনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। শনিবারের (৯ মার্চ) নির্বাচনে যারা প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশের কম পেয়েছেন তাদেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন চৌধুরী। 

মেয়র পদে মসিকের প্রথম নগরপিতা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটুর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু ছাড়াও ছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সদস্য রেজাউল হক ও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শহিদুল ইসলাম। তবে ফলাফলে ভোটের ঝড়ে প্রতিদ্বন্দ্বী সকল প্রার্থীকেই দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ১ লাখ ৩ হাজার ৮৪১ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে আবারও সিটির মুকুট মাথায় পরেছেন ইকরামুল হক টিটু। এতে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য হাতি প্রতীকের সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু জামানত রক্ষা করতে পারলেও জেলা আ.লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলমসহ অন্য দুই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। 

ব্রহ্মপুত্র তীরের এই নগরীতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। ভোট পড়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৪৩৯ টি। প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশ হয় ২৩ হাজার ৬৮০ টি ভোট। যারা এর চেয়ে কম ভোট পেয়েছে তাদেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বলে জানান নির্বাচন কর্মকর্তা।

নির্বাচনে নবনির্বাচিত মেয়র ইকরামুল হক টিটু টেবিল ঘড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৪ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু হাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৭৬৩ ভোট। এ ছাড়া ঘোড়া প্রতীকে এহতেশামুল আলম ১০ হাজার ৭৭৩, হরিণ প্রতীকে রেজাউল হক ১ হাজার ৪৮৭ ভোট এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৩২১ ভোট৷ 

ফলাফল ঘোষণার পর প্রদত্ত ভোটের মাত্র ৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলমের জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া নিয়ে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপকভাবে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। 

এ ব্যাপারে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক রিপন বলেন, আমাদের দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাধারণ কর্মীদের প্রতিফলন কম হয়। যেটা এই নির্বাচনে সাধারণ জনগণ তাদের মতামতের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। আমরা অনেকে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার পর সাধারণ নেতাকর্মীদের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করি না। কমিটি গঠন, পদ বাণিজ্য সহ নানা অসংগতি কর্মীদের মনের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি করে। আমি মনে করি এই নির্বাচনের এমন ফলাফল সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ। 

তিনি বলেন, নির্বাচনটা করে দলের কর্মীরা। কর্মীরাই সাধারণ ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করে। যখন কর্মীরা কোনো প্রার্থীর পক্ষে উজ্জীবিত না হবে এমন ফলাফলই স্বাভাবিক। 

নির্বাচন কমিশন জানায়, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৮৮ হাজার ৯৪৮ ভোট; বাতিল ভোটের সংখ্যা ৪৯১টি। ভোটের শতকরা হার ৫৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। 

উবায়দুল হক/এএএ