সৌদি আরবে রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামীকাল সোমবার (১১ মার্চ) থেকে দেশটিতে শুরু হবে রোজা। তাদের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরেও অর্ধশতাধিক গ্রামে সোমবার থেকে রোজা শুরু হবে। আজ রাতে তারাবির নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে রোজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।  

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফের পীরজাদা ড. বাকী বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী।

জানা গেছে, প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ১৯২৮ সালে আগাম রোজা রাখাসহ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালনের নিয়ম চালু করেন সাদ্রা দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইসহাক (রা:)। তার অনুসারীরা প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপন করে থাকেন। সেই থেকে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা আরব দেশসমূহের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখেন ।

স্থানীয়রা জানান, জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলীপুর, ভোলাচোঁ, ঝাকনি, সোনাচোঁ, প্রতাপপুর ও সুরঙ্গচাইল গ্রাম, ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুরঙ্গচাউল, কাইতাড়া, উভারামপুর, টোরামুন্সিরহাট, মতলব উত্তর উপজেলার পাঁচানী, বাহেরচর পাঁচানী, আইটাদি পাঁচানী, দেওয়ানকান্দিসহ অর্ধশতাধিক গ্রামের মুসল্লিরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রেখেছেন।

মতলব উত্তরের দেওয়ানকান্দি গ্রামের বোরহান উদ্দিন ডালিম বলেন, আমরা চট্টগ্রামের মির্জাখিল দরবার শরিফের অনুসারী। প্রতি বছর আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদ উদযাপন করে আসছি। এবারও দেশটির সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখব। 

হাজীগঞ্জের সাদ্রা গ্রামে মুরাদ নামে এক যুবক বলেন, সাদ্রা দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাক (রা:) ১৯২৮ সাল থেকে বিশ্বের যেকোনো দেশে সর্ব প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো পালন করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রতি বছর ঈদ ও রোজা পালন করে আসছি। এছাড়াও শবে বরাত, শবে কদর এবং শবে মেরাজসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠান এভাবেই পালন করি। ইমান আবু হানিফা (রা:)-এর মতে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে চাঁদ উঠার ভিন্নতার কারণ গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে আরবি তারিখ শুরু হয়ে যায়। তার মানে সময়ের পার্থক্যের কারণে ঈদ, রোজা যেই সময়ে বাংলাদেশে করে থাকে সেই হিসেবে ঈদ ও রোজা কাজা হয়ে যায়। এজন্য সারা বিশ্বে একই সময়ে ঈদ, রোজা পালন করা উচিত। কারণ ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম।

শহীদ  নামে স্থানীয় আরেকজন বলেন, ছোটবেলা এখন পর্যন্ত প্রথম চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে রোজ রাখি। আমরা বিশ্বের যেকোনো জায়গা চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করি।

দেশের আগাম ঈদের প্রবক্তা হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবারের পীর মাওলানা আরিফ চৌধুরী বলেন, সর্বপ্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজা রাখি এবং ঈদ উদযাপন করি। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলেই আমরা রোজা ও ঈদুল ফিতর পালন করছি। বর্তমানে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর হয়ে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ঈদ উদযাপন করছে।

সাদ্রা দরবার শরিফের পিরজাদা ড. বাকী বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী বলেন, আগাম রোজা ও দুই ঈদ পালনের প্রবর্তক মাওলানা ইসহাক (রহ.)। প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপনের নিয়ম চালু করেন। সৌদি আরবে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখার খবর পেয়েছি। আমরা নিজেরাও খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হয়েছি। তাই আগামীকাল থেকে রোজা রাখব আমরা।

আনোয়ারুল হক/এসকেডি