নড়াইলের কালিয়ায় উপজেলার বারইপাড়ায় নবগঙ্গা নদীর ওপর কচ্ছপ গতিতে চলছে সেতু নির্মাণের কাজ। আড়াই বছরে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বারবার মেয়াদ বাড়িয়ে ছয় বছরেও কাজ শেষ হয়নি। নির্মাণকাজ শেষের দিকে এসে সেতুর নকশায় ত্রুটি থাকায় নির্মাণ ব্যয়ও বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ এ পথে চলাচলকারী মানুষেরা। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে অতিদ্রুতই সেতু নির্মাণের বাকি কাজ শেষ হবে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল জেলা শহর থেকে কালিয়া উপজেলা শহর ও ৮টি ইউনিয়নকে পৃথক করে রেখেছে নবগঙ্গা নদী। ফলে যোগাযোগে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয় কালিয়া উপজেলাবাসীকে। সেই ভোগান্তি কমাতে উপজেলার বারইপাড়া খেয়াঘাটে ২০১৭ সালে একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। নড়াইল-কালিয়া সড়কের ২১ কিলোমিটারে নবগঙ্গা নদীর ওপর ৬৫১.৮৩ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০.২৫ মিটার প্রস্থের বারইপাড়া সেতু নির্মানের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৫ কোটি টাকা। 

সেতু নির্মাণের কাজ পেয়েছিলেন যশোরের ঠিকাদার মইনুদ্দীন ও জামিল ইকবাল। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০১৯ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তখন নির্দিষ্ট সময় শেষে কাজের অগ্রগতি ছিল মাত্র ২৩ শতাংশ। পরবর্তী সময়ে আরও তিনবার সময় বৃদ্ধি করা হলেও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। শেষ সময়ে অর্থাৎ ৪র্থ বার মেয়াদ বৃদ্ধির সময় বাঁধে নকশা জটিলতা। সেতুর ছাদের কিছু অংশ নির্মানকাজ শেষে দেখা যায় সেতুর নিচ দিয়ে নৌ-যান চলাচল করতে পারছে না। পরে নকশা পরিবর্তন করে উঁচু করে সেতু নির্মানের জন্য নতুন নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় বাড়ে প্রায় ৬০ কোটি টাকা। কয়েক দফায় সময় ও অর্থ বেড়ে এখন ব্যয় একশ ৩৫ কোটি ৯২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সেতুটি নির্মাণ হলে নড়াইল জেলা শহরের সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হবে কালিয়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন। ফলে তাদের ভোগান্তি কমবে। তবে সেতু নির্মাণের ধীরগতিতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। দ্রুত কাজ শেষ করার আহ্বান তাদের।

উপজেলার যাদবপুরের বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা রোগী নিয়ে যদি খুলনা বা নড়াইল যেতে চায় খেয়া পারের জন্য আমাদের ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনেক সময় রাত্রে নৌকা পাওয়া যায় না। আমাদের ভোগান্তি হয়৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের একটাই আবেদন দ্রুত সেতুটি নির্মাণকাজ শেষ করার ব্যবস্থা নেওয়া হোক। 

এ পথ দিয়ে চলাচলকারী আরও কয়েকজন বলেন, নড়াইল, কালিয়া, খুলনা, যশোর, বরিশালসহ বিভিন্ন অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এ ঘাট দিয়ে পার হয়। অনেক সময় খেয়া পাওয়া যায়, অনকে সময় যায় না। ঘাটগুলো ভালো না, ব্রিজটা হতে গিয়েও হচ্ছে না। আমরা খুব দূরাবস্থায় আছি। এর সুব্যবস্থা করলে ভালো হয়।  

নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের কাজ চলমান রযেছে। নকশা পরিবর্তনের কারণে আলাদা টেন্ডার করা হয়েছে। টেন্ডারটি লাইভে আছে। আশা করি ২০২৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করতে পারব। 

রাজু শেখ/আরকে