ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় ইউরিয়া সার মিশ্রিত মুড়ি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করা হচ্ছে- এমন অভিযোগ পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান তিনি সাংবাদিক। তথ্য সংগ্রহকালে তাদের ওপর চড়াও হয়ে তাদের লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনায় এক সাংবাদিকের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ওই কারখানার মালিক। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেলে মধুখালী উপজেলার নওপাড়া বাজারে অবস্থিত ‘মায়ের দোয়া মুড়ি ও চিড়া অটো মিল’ নামে ওই কারখানায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে দৈনিক কালবেলা পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি তন্ময় উদ্দৌলা (৩৪), নাগরিক বার্তার স্টাফ রিপোর্টার এনামুল খন্দকার (২৯) ও মুক্ত খবরের স্টাফ রিপোর্টার আরিফুজ্জামান চাকলাদার (৪৩) ওই মুড়ি কারখানায় যান।

মধুখালীর নওপাড়া বাজারে মধুমতি নদীর পাড়ে এ কারখানাটি  আনুমানিক ৮ শতাংশ জমির ওপর অবস্থিত। এ কারখানার মালিক মো. ইশারত মোল্লা (৫০) অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য।

মামলার এজাহারে দৈনিক কালবেলা পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি তন্ময় উদ্দৌলা উল্লেখ করেছেন, ওই কারখানায় ইউরিয়া সার মিশ্রিত মুড়ি উৎপাদনের দৃশ্য ধারণকালে প্রতিষ্ঠানের মালিক তাদের ওপর চড়াও হন। এ সময় তারা নিজেদের পরিচয় দিলে তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং মিলে কর্মরত কর্মচারীদের নিয়ে তাদের মোবাইল ফোন, ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টাসহ তাদের ওপর হামলার পাশাপাশি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। একপর্যায়ে মিল মালিক তাদেরকে মিল থেকে বের করে পাশের অফিসে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অবরুদ্ধ করে রাখেন। অবরুদ্ধ অবস্থায় সংবাদকর্মীরা বিষয়টি মোবাইল ফোনে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এবং থানা পুলিশকে জানালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে সংবাদকর্মীরা মধুখালী থানায় উপস্থিত হয়ে তাদের ওপর হামলার বিবরণ তুলে ধরে এ হামলার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

মধুখালী থানা সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় দৈনিক কালবেলা পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি তন্ময় উদ্দৌলা বাদী হয়ে ওই কারখানার মালিক মো. ইশারত মোল্লা এবং অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে আসামি করে মারপিট এবং আটকে রাখার অপরাধের মামলা করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মধুখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন বলেন, মায়ের দোয়া মুড়ি ও চিড়া অটো মিলের মালিক ইশারতকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন উপস্থাপন করব।

জহির হোসেন/আরএআর