পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন এবাদুল ওরফে সাজ্জাদ শেখ। দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর অবশেষে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাজ্জাদ শেখকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

এর আগে বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে র‌্যাবের সহযোগিতায় ইন্দুরকানী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। 

ইন্দুরকানী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তারের পর থানা এলাকায় ইন্দুরকানী, মোড়েলগঞ্জ ও পিরোজপুরের শতাধিক ভুক্তভোগী নারী-পুরুষ জড়ো হয় এবং বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে।

জানা যায়, ২০২২ সালে ইন্দুরকানী উপজেলার কলারণ গ্রামের মৃত ফজলুর রহমান শেখের ছেলে সাজ্জাদ শেখ পার্শ্ববর্তী চর হোগলাবুনিয়া গ্রামে স্থানীয়দের জমি লিজ নিয়ে বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত শেখ ফজলুর রহমান ফাউন্ডেশন সৌদিয়া বহুমুখী প্রকল্পের আওতায় কয়েকটি মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করে সেখানে স্থানীয়দের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা সংগ্রহ করেন। এছাড়াও স্থানীয়দের পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার কথা বলেও টাকা সংগ্রহ করেন। পরে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হন সাজ্জাদ শেখ ও তার সহযোগীরা। 

ভুক্তভোগী ফাতেমা বেগম, জয়নাল অবেদিন শেখ, শিক্ষক আব্দুল বারি, আলমঙ্গীর শেখ, লাকি আক্তার, বশির হাওলাদারসহ অনেকে জানান, সাজ্জাদ শেখ বিল্ডিং করে দেওয়ার কথা বলে, বিদেশে কর্মী পাঠানোর কথা বলে, প্রকল্পে চাকরি এবং পাকা ঘর করে দেওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমাদের টাকা ফিরে পেতে চাই এবং এই প্রতারকের কঠিন বিচার দাবি করছি। যেন অন্য কোনো প্রতারক এ রকমের কাজ না করতে পারে।

ইন্দুরকানী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাচঁ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও এলাকার আলোচিত প্রতারক এবাদুল ওরফে সাজ্জাদ শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এবাদুল ওরফে সাজ্জাদ শেখ ও তার সহযোগীদের বিচারের দাবিতে দফায় দফায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন এবং এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ওসি, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মোরেলগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

আরএআর