কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা এলাকার বেড়বাড়াদী গ্রামের মজনুর রহমানের মেয়ে মেহনাজ আরা প্রাপ্তির বুধবার (২০ মার্চ) বিয়ের কথা ছিল। তবে বিয়ের তিন দিন আগে রোববার (১৮ মার্চ) তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংগ্রাম নামের এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।

সংগ্রাম কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। এ ঘটনায় সংগ্রামসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই তরুণীর বড় ভাই আসিফ করিম।

প্রাপ্তি হরিনারায়ণপুর দোয়ারকাদাস আগরওয়ালা মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা এলাকার বেড়বাড়াদী গ্রামের মজনুর রহমানের মেয়ে। মজনুর রহমান হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি ও ঝিনাইদহ কেসি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তিনি বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। মজনুর রহমান বিএনপির বর্তমান কোনো কমিটিতে না থাকলেও ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃত্ব দেন। এ নিয়ে কুষ্টিয়াজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, মেহনাজ আরা প্রাপ্তি রোববার দুপুরে হরিনারায়ণপুর বাজারে যান কেনাকাটা করতে। কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে বেড়বাড়াদী এলাকা থেকে হরিনারায়ণপুর গ্রামের আজগর আলীর ছেলে ও ছাত্রলীগ নেতা সংগ্রাম কলেজছাত্রী প্রাপ্তিকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় সংগ্রামসহ কয়েকজন প্রাপ্তিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে কলেজছাত্রী প্রাপ্তির বড় ভাই আসিফ করিম প্রাপ্ত জানান, ছাত্রলীগ নেতা সংগ্রাম প্রায়ই তার বোন প্রাপ্তিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এতে সাড়া দিতো না বোন প্রাপ্তি। রোববার দুপুরে আবারও প্রেমের প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করে প্রাপ্তি। তাই জোরপূর্বক প্রাপ্তিকে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ইবি থানায় সংগ্রাম ও তার বাবা আজগর আলী এবং একই এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে সোহানকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে পুলিশ প্রাপ্তিকে উদ্ধারের চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনায় পুলিশ সংগ্রামের বাবা আজগর আলীকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানান প্রাপ্ত।

এ বিষয়ে ইবি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মামুন রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত সংগ্রামসহ কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করা যায়নি। তবে চেষ্টা চলছে। মোবাইলের সূত্র ধরে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক বলেন, ছাত্রলীগের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। সংগ্রামের বিষয়টি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুনেছি। তবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

রাজু আহমেদ/আরকে