বাগেরহাটে ৬৬৫ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। কিছুটা কম দামে মাংস কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। তবে দাম কম হওয়ায় চর্বি, হাড়সহ নিম্নমানের মাংস বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, দাম কম রাখার কারণে চর্বি ও হাড়সহ মাংস দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে বাগেরহাট শহরের প্রধান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। একদিন আগেও এ বাজারে গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের নির্দেশে কম দামে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

দাম কিছুটা কম হওয়ায় ক্রেতারা খুশি মনে পরিবারের জন্য মাংস কিনছেন। কেজিতে ৮৫ থেকে ১৩৫ টাকা পর্যন্ত কম দামে কিনতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তারা। ভবিষ্যতেও এ দাম বহাল রাখার দাবি করেন ক্রেতারা। তবে কম দামে ইচ্ছেমতো মাংস নিতে পারছেন না ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা যেভাবে মাংস কেটে দিচ্ছেন সেভাবেই নিতে হচ্ছে।

‘গরুর গোশত দিয়ে কবে যে ভাত খেয়েছি মনে নাই। কিনমু ক্যামনে? দাম বেশি। রোজার মাসে আয় রোজগার কুমলেও সব জিনিসের দাম বাড়ছে। যে কারণে পোলাপানরে ভালো খাওয়াতি পারি না।’— দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধিতে এভাবেই নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন শেখ মোতাহের নামে বাগেরহাটের এক রিকশাচালক।

তিনি বলেন, ‘আজকে (মঙ্গলবার) বাগেরহাটে গরুর গোশতের দাম কুমিছে, আধা কেজি কিনিছি পোলাপানরে নিয়ে খাবো।’

মাহমুদুল হাসান নামের এক ক্রেতা বলেন, গরুর গোশতের দাম কেজিতে প্রায় একশ টাকা কমেছে। আজ ৬৬৫ টাকা করে কিনলাম। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে আলু, মরিচ, খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও কমানো উচিত।

আব্দুল গফফার শেখ নামের এক বৃদ্ধ ক্রেতা বলেন, দাম কমেছে। কিন্তু আমরা আমাদের পছন্দমতো গোশত কিনতে পারছি না। ব্যবসায়ীরা চর্বি ও হাড়সহ যেভাবে দিচ্ছেন, সেভাবে নিতে হচ্ছে।

তানজির কায়সার নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, দোকানের সামনে টানানো গোশত থেকে পছন্দ করে একটি পিস দিতাম। সেটি কেটে টুকরো করে দিত, তা-ই কিনতাম। কিন্তু আজ সেভাবে নিতে চাইলে দোকানদার বলল দাম কমে গেছে, এভাবে দেওয়া যাবে না। আগে থেকে টুকরো করে রাখা গোশত নিতে হবে।

খান মিট হাউসের ব্যবসায়ী শাহিন হাওলাদার বলেন, বাগেরহাট ছোট শহর, এখানে সবাই-সবার পরিচিত। তাই গোশত বেছে দিতে হয়। কিন্তু এ দামে বেছে দেওয়া যায় না। যার কারণে চর্বি ও হাড়সহ বিক্রি করতে হচ্ছে।

মো. কামরুল নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, এ দামে কখনো গোশত বিক্রি করিনি। বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের নির্দেশে এ দামে বিক্রি করছি। দু’একদিন বিক্রি করার পর বোঝা যাবে এ দামে লস হবে নাকি পোষানো যাবে।

বাগেরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তরফদার বলেন, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা ৬৬৫ টাকা কেজি দরে গরুর গোশত বিক্রি করার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছি। অন্য পণ্যও নির্ধারিত দামে বিক্রির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ৬৬৫ টাকার অতিরিক্ত দামে গরুর গোশত বিক্রি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন এ কর্মকর্তা।

শেখ আবু তালেব/এসএসএইচ