খাগড়াছড়ি বাজারে আকস্মিক গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার নির্ধারিত দামে গরুর মাংস বিক্রি করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। স্থানীয় পর্যায়ে বেশি দামে গরু ক্রয় করতে হয়। তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মাংস বিক্রি। 

বুধবার (২০ মার্চ) খাগড়াছড়ি পৌর মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে নেই গরুর মাংস। কয়েকজন মাংস ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় গতকাল মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গরুর মাংস বিক্রি। এমন সিদ্ধান্তে ক্রেতাদের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন এ খাতে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরাও।

খাগড়াছড়ি বাজারের মাংস ব্যাবসায়ী মো. আনোয়ার জানান, খাগড়াছড়িতে দীর্ঘদিন যাবত ৭০০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করে আসছেন তারা। হঠাৎ করে সরকার গরুর মাংসের দাম ৬৬৪ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করে পোষাচ্ছে না বিধায় গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। 

এদিকে গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ হওয়াতে খাসির মাংসের চাহিদা বেড়েছে। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১০৩ টাকা কমে ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংস। খাগড়াছড়িতে ৮০০ টাকা দামে খাসির মাংস বিক্রি হতো। বর্তমানে সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ১ হাজার ৩ টাকা কেজি। অতিরিক্ত মুনাফা হওয়ায় খুশি খাসির মাংস বিক্রেতারা।  

খাগড়াছড়ি মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নুরুল আলম ঢাকা পোস্টকে জানান, গত ১৮ মার্চ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে গরুর মাংস ৬৬৪ টাকা দামে বিক্রি করতে। খাগড়াছড়িতে দেশি গরু জবাই করতে হয়। বিভিন্ন খাতে টাকা দিয়ে দাম বেশি পড়ে যায়। এ নিয়ে বাজার ব্যাবসায়ী সমিতি, হোটেল ব্যবসায়ী সমিতিসহ কয়েক দফায় বৈঠক করা হলেও কোনো সুরাহা মেলেনি। সরকার নির্ধারিত দামে গরুর মাংস বিক্রি করলে লস হবে। বেশি দামে বিক্রি করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে জরিমানা করবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় আপাতত গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ করে রেখেছেন তারা। 

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি আবু তাহের মোহাম্মদ ঢাকা পোস্টকে জানান, রমজান মাছ-মাংসের চাহিদা রয়েছে। সরকার নির্ধারিত মূল্য প্রকাশের পর থেকে খাগড়াছড়িতে গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ। লস হচ্ছে বলে যাতে ভোক্তাদের জিম্মি করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। খাগড়াছড়িতে খাসির মাংস ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো। সরকার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে অঞ্চলভিত্তিক দাম নির্ধারণ করলে ক্রেতা-বিক্রেতা সকলের জন্যই ভালো হয়। 

মোহাম্মদ শাহজাহান/আরএআর