মৌসুমের শুরুতেই বাজারে তরমুজ উঠলেও এবার দাম চড়া। সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে তরমুজের দাম। ফলে ক্রেতা সংকটে পড়েছেন পিরোজপুরের তরমুজ ব্যবসায়ীরা। ক্রেতা কম হওয়ায় এবার তরমুজের ব্যবসা করছেন না অনেক মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী। 

শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে পিরোজপুর সদর উপজেলা বাজারে ঘুরে দেখা যায়, তরমুজের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় নেই। বাজারের তিন থেকে চারটি দোকানে তরমুজ নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। দোকানে অলস সময় পার করছেন তারা। রমজানের শুরু থেকেই তরমুজের দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের তরমুজ কেনার আগ্রহ কম দেখা গেছে। বাজারে কেজিতে তরমুজ বিক্রি না হলেও আকৃতি ভেদে চড়া দাম হাঁকা হচ্ছে। ফলে এতো টাকায় তরমুজ নিতে চাচ্ছেন না ক্রেতারা।

পিরোজপুর সদর উপজেলা বাজারের দুলাল ফল ভান্ডারের মালিক বাপ্পি সাহা বলেন, বর্তমানে তরমুজের ক্রেতা অনেক কম। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রি করলেও আগ্রহ কম। দোকানে পর্যাপ্ত তরমুজ থাকলেও তা বিক্রি করতে পারছি না। ছোট আকারের ১টি তরমুজ ১৫০ টাকা, মাঝারি আকারের তরমুজ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা এবং বড় আকারের প্রতি পিস তরমুজ ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ছোট বড় মিলিয়ে গড়ে প্রতি পিস তরমুজ ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে আমাদের।

আরেক মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী মো. নেওয়াজ বলেন, আমরা এখনকার ব্যবসায়ীরা আড়ত থেকে পাইকারি দরে তরমুজ কিনি। কিন্তু এবার আড়ত থেকে বেশি দামে তরমুজ কিনতে হচ্ছে। সেখান থেকে ছোট বড় মিলিয়ে প্রতি পিস তরমুজ ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা দরে কিনে আনতে হচ্ছে। তাই দামও বেশি চাওয়া হচ্ছে। দাম শুনেই ক্রেতারা চলে যাচ্ছেন। বাজারে তরমুজের বাড়তি দামে একেবারে ক্রেতা নেই এবার তরমুজের।

পিরোজপুর শহরের বাসিন্দা মুরাদ আকন বলেন, তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। ঠান্ডা ফল হওয়ায় রমজানে এর বেশ চাহিদা রয়েছে। তবে এবার তরমুজের দাম অনেক বেশি যদিও বাজারের দোকানগুলোতে পিস আকারে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে কিন্তু দাম অনেক বেশি। তাই ইচ্ছে থাকলেও তরমুজ কিনতে পারছি না।

তরমুজ কিনতে আসা পৌর শহরের নামাজপুর এলাকার বাসিন্দা মেহেদী মাসুদ বলেন, একটা বড় আকারের তরমুজ কিনতে গেলে ৪৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা লাগে। একজন নিম্নআয়ের মানুষের পক্ষে তরমুজ কেনা এখন স্বপ্নের মতো হয়ে গেছে। তরমুজের দাম ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে হলে ভালো হয়।

পিরোজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, পিরোজপুরে তরমুজের আবাদ তুলনামূলক কম হয়। তবুও এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি তরমুজ আবাদ হয়েছে। এবার আমাদের তরমুজের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২০ হেক্টর জমিতে। সেখানে ১৪০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। মূলত তরমুজের প্রধান মৌসুম হচ্ছে এপ্রিল থেকে মে মাস। মৌসুমের আগে যেসব কৃষক তরমুজ তুলতে পেরেছেন তারা ভালো দাম পাচ্ছেন।

আরএআর