নাটোরের গুরুদাসপুরে কিস্তি দিতে না পারায় কুলসুম বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এনজিও কর্মীর বিরুদ্ধে। এ সময় কুলসুম বেগমের স্বামী সোহেল হোসেন ও দেবর শান্ত হোসেনও আহত হন।

শনিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পমপাথুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা বর্তমানে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মারধরের শিকার গৃহবধূ কুলসুম বেগম বলেন, আশা এনজিওর মৌখাড়া শাখা থেকে আমার স্বামী সোহেলের নামে ৮৬ হাজার ও শাশুড়ি আরজিনা বেগমের নামে ৪৫ হাজার টাকা সাপ্তাহিক কিস্তি হিসেবে ঋণ নিয়েছিলাম। প্রায় দশ বছর যাবৎ এই সমিতি থেকে আমরা ঋণ নিয়ে আবার পরিশোধও করেছি। কিন্তু চলমান কিস্তির গত দুই সপ্তাহের টাকা বকেয়া পড়ে যায়। ছেলের অসুস্থতা ও আর্থিক সমস্যার কারণে এই দুই সপ্তাহ কিস্তি দিতে পারিনি। শনিবার সন্ধ্যার আগ দিয়ে আশা এনজিওর লোকজন আমাদের বাড়িতে কিস্তির টাকা আদায় করার জন্য আসেন। টাকা দিতে সমস্যা হচ্ছে বলে এনজিও কর্মীদের আমি অনুরোধ করে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলি। এ কথা শুনে তিনি বিভিন্ন ধরনের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে এনজিওকর্মীদের আমি বলেই ফেলি, যে আমাকে মারলেও এখন টাকা দেওয়া সম্ভব হবে না। এ কথা বলার পরেই বাড়ির উঠানে থাকা সেলাই মেশিনের টেবিল থেকে কেঁচি নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়। পরে আমার স্বামী ও দেবর এগিয়ে এলে তাদেরকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করে। পরে স্থানীয়রা এসে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশা এনজিওর মৌখাড়া শাখা ব্যবস্থাপক মহিদুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, গ্রাহকের বাড়িতে আমাদের এক নারী কর্মী টাকা আদায়ে গেলে বারবার তাকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল আমাদের অন্য কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ওই গ্রাহকের বাড়িতে গেলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় তারাই (গ্রাহক) অতর্কিত হামলা চালিয়েছেন। এ ঘটনায় আমরাও থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।

গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন বলেন, এনজিও কর্মী ও গ্রাহকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। তারা বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গোলাম রাব্বানী/আরকে