জাতীয় পতাকা, গোলাপ ফুল ও রজনীগন্ধা হাতে নতুন জীবন পেল প্রবেশনে থাকা ৩৫ জন শিশু-কিশোর। রাজশাহী জেলা নারী ও শিশু-২ আদালতের বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে প্রবেশনে থাকা ৩৫ জন শিশু-কিশোরকেমুক্তি দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিল। 

জানা গেছে, মাদকদ্রব্য, মারামারি, শ্লীলতাতাহানি, অপহরণসহ বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত ছিল তারা। তাদের গত ৬ থেকে ৭ মাস আগে প্রবেশনে দেওয়া হয়। এতে তাদের বই পড়া, বাবা-মায়ের সাথে ভালো ব্যাবহার, গাছ লাগানোসহ ভালো কাজ করার জন্য প্রবেশনে দেওয়া হয়। এই ৩৫ জনকে দেওয়া কাজগুলো তারা ঠিকঠাকভাবে করেছে। তাই আজ আদালত তাদের মুক্তি দিয়েছেন। 

মুক্তি পাওয়া মঞ্জুরুল ইসলাম বলে, আমার বিরুদ্ধে মাদকের মামলা ছিল। আমাদের ভালো হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। অসৎ সঙ্গ পরিহার করতে বলেছে। আমি সেই ভাবে চলেছি। 

অপর মুক্তি পাওয়া আবদুল কদ্দুস বলেন, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমাদের ভালোভাবে জীবনযাপনের সুযোগ করে দিয়েছে। প্রবেশনে থাকা অবস্থায় আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী সব কাজ করেছি। আমরা আর এ ধরনের কাজে জড়াবো না। 

রাজশাহী জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আজকের শিশুই আগামী দিনের পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের অভিভাবক। এই শিশুদের কল্যাণ সাধনের মধ্যেই ভবিষ্যতের কল্যাণ নিহিত। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ শিশু।

গত এক বছরে রাজশাহীর শিশু আদালত-২ এর বিজ্ঞ বিচারক  প্রায় ৮০ টি মামলায় ৮০ জন শিশু-কিশোরের কল্যাণে পারিবারিক সম্মেলনের মাধ্যমে ডাইভারশন গ্রহণের জন্য প্রবেশন কর্মকর্তাকে আদেশ দেন। 

তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞ আদালতের আদেশে আমরা বিদ্যমান মামলার বাদী ও শিশুর অভিভাবকের উপস্থিতিতে শিশুর চারিত্রিক, মানসিক, আবেগীয় উন্নতির জন্য উপযুক্ত শর্তসমূহ আরোপ করি। ডাইভারশনের মেয়াদ সম্পন্ন এবং আরোপিত শর্তসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালন করায় বিজ্ঞ আদালত আজ ৩৫ জন শিশুকে চূড়ান্ত মুক্তি দিলেন। আদালতের এই সিদ্ধান্তে মামলার উভয় পক্ষেরই সন্তুষ্টি রয়েছে।

শাহিনুল আশিক/আরএআর