সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় মার্কের বিনিময়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তিনি শ্রেণিকক্ষেই প্রাইভেট পড়ান বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৪ মার্চ) সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক, উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারি আকবর আলী কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর এমন একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে গিয়ে একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বললে তারাও একই অভিযোগ করেন। 

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, শিক্ষক জাকির হোসেন ২০০৫ সালের জুলাই মাসে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে একই কর্মস্থলে কর্মরত আছেন তিনি। পেয়েছেন শিক্ষক পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের পদ। তার বিভাগে শিক্ষক হিসেবে তিনি একাই রয়েছেন বলেও জানা গেছে। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে কলেজে ক্লাস চলাকালীন সময়ে প্রাইভেট পড়ান এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় মার্ক দেওয়ার কথা বলে টাকা নেন। 

উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা পাপ্পু, মারুফ সিদ্দিক, সাজ্জাদ হোসেন খান, রাব্বি, অনন্ত রানাসহ একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষক জাকির হোসেন এখনো অর্নাস ১ম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজ চলাকালীন ক্লাসে বসে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন এবং তার জন্য টাকাও নিচ্ছেন। এছাড়া তিনি অর্নাস ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের গণিত ব্যবহারিক পরীক্ষার মার্ক দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০-৮০০ টাকা করে নিয়েছেন। যা নিয়ম বহির্ভূত ও অবৈধ।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, সরকারি পরিপত্রে ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য ১৫০ টাকার বেশি নেওয়ার নিয়ম নেই অথচ তিনি প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ব্যবহার পরীক্ষার নামে ৫শ থেকে ৮শ করে টাকা নিচ্ছেন। যারা গণিতে পড়ে তারা প্রায় সবাই স্যারের দাবিকৃত এ টাকা না দিলে সমস্যা হতে পারে ভেবেই সবাই টাকা দেন। বিষয়গুলো আমরা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছি। অভিযোগগুলো যাচাই বাছাই করে অভিযুক্ত শিক্ষক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি অভিযুক্ত শিক্ষক জাকির হোসেন। 

উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর মঞ্জুর মোর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, এখানকার অধ্যক্ষ বদলি হয়ে গেছেন। আমি সদ্যই অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দেখছি। আমার হাতে আসলে খুব বেশি করণীয়ও নেই। তারপরও বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখব।

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযোগের কপিটি হাতে পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হবে যে ব্যাপারটি আসলে কী। তারপর পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে। 

শুভ কুমার ঘোষ/আরকে