বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকলেও ওই জমিতে পাট বপন নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ধলু ব্যাপারী নামের এক বৃদ্ধকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৭ মার্চ) ভোরে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বি.কে নগর ইউনিয়নের মৃধা কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ধলু ব্যাপারী (৮৫) মৃধা কান্দি গ্রামের মৃত হুকুম আলী ব্যাপারীর ছেলে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ধলু ব্যাপারীর সঙ্গে দুদু মিয়া ব্যাপারী, বাদশা ব্যাপারী ও আরিফ ব্যাপারীদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে অনেকবার সালিশ হলেও সমাধান না হওয়ায় আদালতে মামল হয়। আদালত বিরোধ সমাধান করার আগেই গতকাল ধলু মিয়া ব্যাপারী জমিতে চাষাবাদ করতে যান। এ সময় দুদু মিয়া ব্যাপারী বাধা দেন। পরে আজ বুধবার সকালে দুদু ব্যাপারী তার লোকজন নিয়ে ওই জমিতে পাটের বীজ বপন করতে যান। এ সময় ধলু ব্যাপারী সেখানে গিয়ে বাধা সৃষ্টি করলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে মারধর করা হয়। এরপর অসুস্থ ধলু ব্যাপারীকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত দুদু মিয়া ব্যাপারীসহ অভিযুক্তরা পালাতক রয়েছেন।

নিহত ধলু ব্যাপারীর ছেলে মিজান ব্যাপারী (৩৫) ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। এরপর বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে গতকাল আমার বাবা চাষ দিতে গেলে দুদু ব্যাপারীরা বাধা দেন। কিন্তু আজ ভোরে দুদু ব্যাপারী ওই জমিতে পাট বোনার জন্য হালচাষ করতে যান। এ সময় আমার বাবা তাদের বাধা দিলে বাবাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে মারধর করে হত্যা করা হয়। আমার বাবাকে হত্যার বিচার চাই।

বি.কে নগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জোবায়েদ ব্যাপারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দুদু ব্যাপারী ও ধলু ব্যাপারীর মধ্যে বিরোধ চলছিল। বিষয়টি নিয়ে আমরা স্থানীয়ভাবে সালিশ করে মীমাংসার চেষ্টা করছিলাম। ভোরে আমি জানতে পেরেছি ধলু ব্যাপারীকে হত্যা করা হয়েছে। এর বেশি কিছু জানি না।

জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. নাজিম উদ্দীন বলেন, ধলু ব্যাপারী নামের এক বৃদ্ধকে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরীক্ষার পর তাকে আমরা মৃত ঘোষণা করেছি।

জাজিরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিহত ধলু ব্যাপারীর শরীরে আমরা রক্তাক্ত জখম বা বড় ধরনের কোনো আঘাতের চিহ্ন পাইনি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা দায়ের করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাইফ রুদাদ/এমজেইউ