পবিত্র মাহে রমজান ঘিরে বাহারি ইফতার সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছে রংপুরের ছোট-বড় হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো। নগরের অলিগলি থেকে ফুটপাত ও মোড়ে মোড়ে নজর কাড়ছে টেবিলে সাজানো বাহারি সব ইফতার সামগ্রী। তবে মানসম্মত ইফতার কিনতেই দুপুরের পর থেকে রীতিমতো ভিড় করছেন ক্রেতারা। ইফতারের আগমুহূর্ত পর্যন্ত চলে জমজমাট কেনাবেচা।

নানা পদের ইফতারের মধ্যে রংপুরের মানুষদের খাবার তালিকায় মুড়ি, ভাজাপোড়া আর মুখরোচক খাবার প্রাধান্য পায় বহুকাল ধরে। তবে কয়েক বছর ধরে রোজাদারদের খাবারের তালিকায় যুক্ত হয়েছে ‘মস্কট শাহী হালুয়া’। 

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে রংপুর মহানগরীর কাচারি এলাকায় ঘুরে ইফতার বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে। সেখানে এবার বসেছে নগরীর বড় ইফতার বাজার। এখানে মানসম্মত ইফতারের সমারোহে রোজাদারদের কাছে পছন্দের শীর্ষে রয়েছে মৌবন হোটেলের তৈরি ‘মস্কট হালুয়া’। এটি আবার অনেকের কাছে শাহী হালুয়া নামেও বেশ পরিচিত।

সেখানে কথা বলে জানা যায়, মৌবন হোটেলের কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় ময়দা, চিনি, শিরা, অন্যান্য খাদ্য উপকরণ দ্বারা তৈরি হয় এই হালুয়ার ছানা। পরে রুহ আফজা মিশিয়ে অন্য পাত্রে রেখে ঠান্ডা করলেই রুপ নেয় টস টসে লাল রঙের আলতো জমাট বাঁধা হলুয়া। এই জমাট বাঁধা খামির থেকে পিচ পিচ করে কেটে বিক্রির উপযোগী করা হয় রোজাদারদের ইফতারের জন্য। প্রতি পিচ ১০ টাকা করে ছাড়াও ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় এই হালুয়া। রোজাদারদের ইফতার পার্টিও বেশ জনপ্রিয় এই হালুয়াটি।

রংপুর নগরীর আশরতপুর এলাকার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম মৌবন আউটলেটে ইফতার কিনতে এসে ৬ পিস শাহী হালুয়া কিনেছেন। এ সময় কথা হলে আমিরুল ইসলাম বলেন, গত দুই বছর থেকে এখানে এই হালুয়া কিনে নিয়ে যাই ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে। বাসায় মা এবং ছোট বোন খুব পছন্দ করে এই হালুয়া।

মৌবন হোটেলের বিক্রেতা লেবু মিয়া বলেন, দই বড়া, শাহী জিলাপি, বুট বুন্দিয়া, বুটবিরিয়ানী, ছানা পোলাও, পেঁয়াজু আর চপের সঙ্গে প্রত্যেক রোজাদার কিনছেন রুহ আফজার মস্কট হালুয়া। আর প্রত্যেক রমজানে এমন ব্যতিক্রমী আইটেম তৈরি করে থাকেন নগরীর মৌবন হোটেল। তাই গতবারের চেয়ে এবার শাহী মস্কট হালুয়ার চাহিদা বেশি বলেও জানান তিনি।

মস্কট হালুয়া ছাড়াও ৫০ থেকে ৭০ পদের বাহারি মুখরোচক ইফতার সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে মৌবন হোটেলে। মান ভেদে প্রতিটি ইফতার প্যাকেজ ১০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রিও করছেন তারা। এবারের রমজানে বেচাবিক্রি ভালো বলেও জানান মৌবনের ম্যানেজার আশরাফুজ্জামান।

মৌবন হোটেল ছাড়াও নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়, কাচারি বাজার, পায়রা চত্বর, শাপলা চত্বর, মেডিকেল মোড়, সিও বাজার, লালবাগ মোড়, মডার্ন অর্জন মোড়, সাতমাথা এলাকাগুলোতে ইফতারের বড় বাজার। নগরীর ছোট বড় এসব দোকানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ইফতার বেচাবিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর