গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় পরকীয়ার জেরে স্বামীর কাছ থেকে তালাক পেয়েছেন জেমি খাতুন (২৪) নামের এক নারী। পরকীয়ার জেরে স্বামীর সংসার ভাঙলেও এখন নিচ্ছে না সেই প্রেমিকও। ফলে তিনদিন ধরে প্রেমিকের বাড়ির দরজার সামনে অনশনে বসেছেন জেমি খাতুন। আর এ কারণে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পরিবারসহ পালিয়েছেন পরকীয়া প্রেমিক রাসেল। 

শনিবার (৩০ মার্চ) উপজেলার বিকেলে মুক্তিনগর ইউনিয়নের পুটিমারি গ্রামে প্রেমিক রাসেলের বাড়ির সামনে অনশনে বসে থাকতে দেখা গেছে জেমি খাতুনকে। গত বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) বিকেল থেকে অনশনে বসেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, পাঁচ বছর আগে সাঘাটা ইউনিয়নের বাঁশহাটা গ্রামের আব্দুল গফুরের মেয়ে জেমি খাতুনের সঙ্গে একই উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নাজের বেপারীর বিয়ে হয়। পাঁচ বছরের সংসারে তাদের ঘরে একটি সন্তানের জন্ম হয়। 

পরে একই উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের পুটিমারি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে রাসেল সরকারের সঙ্গে পরকীয়ার জড়ান জেমি খাতুন। স্বামী নাজের বাড়িতে না থাকার সুযোগে তারা বিভিন্ন সময়ে অনৈতিক সম্পর্কেও জড়ান। একপর্যায়ে অনৈতিক কার্যকলাপের সময় প্রেমিক রাসেলকে ধরে ফেলেন জেমির শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন তারা। পুলিশ রাসেলকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়। এ ঘটনার পরেই নাজের বেপারী জেমি খাতুনকে তালাক দেন।

পরে রাসেল জেল থেকে জামিনে বের হয়ে এলে জেমির পরিবারের লোকজন রাসেলকে বিয়ে জন্য চাপ দেন। কিন্তু রাসেল বিয়ে না করতে তালবাহানা করতে থাকেন। পরে বাধ্য হয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেল থেকে বিয়ের দাবিতে রাসেলের বাড়ির দরজার সামনে অনশন শুরু করেন জেমি খাতুন। এ অবস্থা দেখে রাসেল সরকার ও তার পরিবারের লোকজন বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান। 

ভুক্তভোগী জেমি খাতুন বলেন, রাসেলের কারণে আমার সংসার ভেঙেছে। রাসেল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমাকে ধর্ষণ করে আসছে। বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত অনশনে থাকবেন বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে মুক্তিনগর ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শ্রী পরিমল চন্দ্র বর্মণ বলেন, এমন ঘটনা শুনে ওই বাড়িতে গিয়ে রাসেলের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। তারা বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন। মেয়েটি বাড়ির দরজার সামনে অনশন করছিলেন। মেয়েটির নিরাপত্তারর কথা চিন্তা করে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে রাসেলের চাচার বাসায় রাখা হয়। পরে সকাল হলে আবারও রাসেলের দরজার সামনে অনশনে বসেছেন তিনি। 

বিষয়টি সমাধানে উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে বলেও জানান ইউপি সদস্য পরিমল চন্দ্র বর্মণ।

রিপন আকন্দ/কেএ