গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে শত্রুতাবশত পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে দেশি ও বিদেশি প্রজাতির অর্ধশতাধিক হাঁস মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। পারিবারিক শত্রুতার জেরে হাসগুলোকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ খামারির। এতে অন্তত ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

রোববার (৩১ মার্চ) সকালে উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত ওই খামারির নাম আব্দুল লতিফ মিয়া। তিনি ওই গ্রামের মৃত আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে।

খামারের মালিক আব্দুল লতিফ মিয়া অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, অভাবের তাড়নায় হাঁস পালন শুরু করি। কুষ্টিয়া থেকে হাঁসের বাচ্চাগুলো এনেছিলাম। নিজের পুকুর ও বাড়ির উঠানের মধ্যেই হাঁসগুলো পালন করতাম। অন্যের জমিতে যেতে দিতাম না। আজ সকালে পুকুরে নামার কিছুক্ষণ পরই হাঁসগুলো মারা যেতে শুরু করে। বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে বুঝতে পেরে কিছু হাঁস জবাই করি।

তিনি আরও বলেন, আমার আয়ের একমাত্র সম্বল ছিল এই হাঁসগুলো। সব শেষ হয়ে গেল আমার। হাসঁগুলোর ওজন হয়েছিল আড়াই থেকে তিন কেজি পর্যন্ত। ভেবেছিলাম ঈদের সময় এগুলো বিক্রি করে কিছু টাকা পাব। ৬০টি হাঁসের মধ্যে ৫০টি শেষ। বাকিগুলোও অসুস্থ। এখন কীভাবে চলব বুঝতে পারছি না। মানুষের এতবড় ক্ষতি মানুষ করতে পারে?

আব্দুল লতিফের বড় ছেলে মাজেদুল ইসলাম লিমন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিবেশী নাছিম আলী আমার বোনের হত্যা মামলার ১নং আসামি। গতকাল রাতে আমার মা নাছিম আলীকে পুকুর পাড়ে দেখেছিলেন। আমাদের ধারণা নাছিম আলীই রাতের আঁধারে পুকুরে বিষ মিশিয়ে এত বড় ক্ষতি করেছেন। এ ঘটনায় আজ দুপুরে আমি বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানাধীন কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

স্থানীয়রা জানান, আব্দুল লতিফের সাতজনের সংসার। হাঁস পালন করেই তিনি দিনাতিপাত করতেন। হঠাৎ করে এতগুলো হাঁস মারা যাওয়ায় তিনি পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছেন। রোগ হলে তো এতগুলো হাঁস একবারে মারা যেত না। পুকুরে বিষপ্রয়োগ করেই হাঁসগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি চেয়েছেন প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রিপন আকন্দ/এমজেইউ