নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এসিল্যান্ডের দ্রুতগামী গাড়িচাপায় ওয়াহিদ হোসেন দিলীপ (৪৫) নামের এক টাইলস ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। রোববার (৩১ মার্চ) বিকেলে আমিনপুর এলাকায় গাড়িচাপায় নিহত হন তিনি। নিহত ওয়াহিদ হোসেন দিলীপ সোনারগাঁ পৌরসভার রাইজদিয়া গ্রামের মসলেউদ্দিনের ছেলে। দিলীপকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

এসময় তথ্য সংগ্রহ করতে সাংবাদিকরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ডা. মোশারফ হোসেন সিজান তাদের ওপর চড়াও হয়ে কক্ষ থেকে বের করে দেন। একপর্যায়ে সাংবাদিকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এ ঘটনায় সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইব্রাহিমকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নিহতের লাশ সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। 

নিহতের ভাতিজা যোবায়ের হোসেন জানান, উপজেলার সোনারগাঁ পৌরসভার রাইজদিয়া গ্রামের মসলেউদ্দিনের ছেলে ওয়াহিদ হোসেন দিলীপ কামাল ভূঁইয়া মার্কেটে দোকান নিয়ে টাইলস ব্যবসা করেন। রোববার বিকেলে তিনি আদমপুর বাজারে যাওয়ার পথে আমিনপুর এলাকায় সাদা রঙের সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইব্রাহিমের সরকারি গাড়ি দ্রুতগতিতে এসে তাকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থল থেকে দিলীপকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

সূত্র জানায়, সাদিপুর ইসলামিয়া সিনিয়র আলীম মাদরাসায় গভর্ণিং বডির নির্বাচনে দায়িত্ব শেষে বাসায় ফেরার পথে এসিল্যান্ড মো. ইব্রাহিম, এসিল্যান্ড কার্যালয়ের প্রধান সহকারী দিপাল দেবনাথ ও কর্মচারী সোহানকে বহন করে গাড়িটি দ্রুতগতিতে এসে আমিনপুর এলাকায় এক পথচারীকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলে ওই পথচারী মারা যায়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোনারগাঁ পৌরসভা থেকে আদমপুর সড়কের আমিনপুর এলাকায় বিকেলে ৫টার দিকে সোনারগাঁ এসিল্যান্ডকে বহনকারী (নারায়ণগঞ্জ-ঠ-১১-০০২১) গাড়ি দ্রুতগতিতে এসে দিলীপকে চাপা দিয়ে বাড়ির টিনের বেড়া ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায়। এসময় গাড়িতে থাকা এসিল্যান্ড মো. ইব্রাহিম ও গাড়িচালক গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যান। গাড়িতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট লেখা ছিল। 

সোনারগাঁ থানা পুলিশের ওসি এসএম কামরুজ্জামান পিপিএম বলেন, আহত অবস্থায় ওয়াহিদ হোসেনকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে মারা যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দিলে তা গ্রহণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, নিহতের পরিবারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। এসিল্যান্ডের গাড়ির চালকের গাফলতি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

শিপন সিকদার/এমএএস