গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনির

ঢাকার তুরাগে অস্ত্রের মুখে কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণে অভিযুক্ত টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরকে কলেজ সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তিনি ভূঞাপুর উপজেলার লোকমান ফকির মহিলা ডিগ্রি কজেলের সভাপতি হিসেবে সম্প্রতি দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

সোমবার (১ এপ্রিল) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরকে কলেজের সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মো. আতাউর রহমানের স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নৈতিক স্খলন, একজন কলেজ শিক্ষার্থীর সঙ্গে অসদাচারণ ও ধষর্ণের অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত টাঙ্গাইলের লোকমান ফকির মহিলা কলেজের সভাপতি মো. গোলাম কিবরিয়াকে তার পদ থেকে অপসারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষ। সভাপতি পদে তার মনোনয়ন বাতিল করে টাঙ্গালের ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ১ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই আদেশ দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, এডহক কমিটির মেয়াদ হবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে নিয়মিত গভর্নিং বডি গঠনের কার্যক্রম অবশ্যই সম্পন্ন করতে হবে।

ভূঞাপুর লোকমান ফকির মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গোলাম রব্বানী রতন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেখেছি। তবে এখনো কোনো চিঠি পাইনি। এর আগে তিনি তার ভাই সংসদ সদস্য ছোট মনিরের ডিও লেটারের মাধ্যমে কলেজের সভাপতি হয়েছিলেন।

জানা গেছে, গোলাম কিবরিয়া বড় মনির টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং জেলা বাস কোচ-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের ভাই হওয়ার দাপটে তিনি ভূঞাপুর ও গোপালপুরে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকার তুরাগ থানায় ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হওয়ার পরদিন থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন। এর আগে টাঙ্গাইলেও এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে আছেন।

কলেজ সভাপতি হিসেবে নিয়োগের দুই সপ্তাহ পর গত ২৯ মার্চ তুরাগ থানার প্রিয়াঙ্কা সিটি আবাসিক এলাকায় বড় মনিরের ফ্ল্যাট থেকে এক কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। তাকে অস্ত্রের মুখে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় বলে মামলায় বড় মনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ওই কলেজছাত্রী। ওইদিন রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে আসা একটি ফোন কলের সূত্র ধরে বড় মনিরের ফ্ল্যাট থেকে ওই কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে রাতেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান বড় মনির। পরে তার বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা হয়েছে।

অভিজিৎ ঘোষ/আরএআর