সিলেটে কিশোরীকে আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকায় আব্দুস সালাম (৪০) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে আটক করেছে র‌্যাব। সোমবার (১ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২টার দিকে জেলার গোলাপগঞ্জ থেকে তাকে আটক করা হয়। 

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে র‍্যাব-৯ এর সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে উইং কমান্ডার মো. মমিনুল হক এ তথ্য জানান। 

মমিনুল হক বলেন,  কিশোরীকে গণধর্ষণের পর গা ঢাকা দেন আব্দুস সালাম। পরবর্তীতে কোতোয়ালি মডেল থানায় ভিকটিমের মা মামলা করলে ছায়া তদন্তে নেমে গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করতে সক্ষম হয় র‍্যাবের বিশেষ টিম। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, হত্যাসহ চারটি মামলা রয়েছে।

তিনি বলেন, কিশোরী গণধর্ষণে জড়িত অপর আসামিদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।  

এই র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, নগরের ঘাসিটুলার মতিন মিয়ার কলোনির এক কিশোরীকে ভালো কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২২ দিন আটকে রেখে গণধর্ষণ করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুস সালাম ও তার সহযোগীরা। তাদের সহযোগিতা করেন একই কলোনির বাসিন্দা রেখা বেগম। তিনি ফুঁসলিয়ে কিশোরীকে আব্দুস সালামের হাতে তুলে দেন। আব্দুস সালাম তার বাসায় আটকে রেখে সহযোগীদের নিয়ে টানা ২২ দিন মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন।পরে মেয়েটি মুক্ত হলেও কয়েকদিন পর ফের আব্দুস সালাম তাকে তুলে নিয়ে আবদুল মনাফের সহযোগিতায় হবিগঞ্জে আটকে রাখেন। সেখানে আব্দুস সালাম, আবদুল মনাফসহ অজ্ঞাত কয়েকজন মিলে ফের ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। প্রায় দুই মাস নির্যাতনের পর গত ২৬ মার্চ এক আত্মীয়ের মাধ্যমে কৌশলে বন্দি দশা থেকে মেয়েটি পালিয়ে আসে এবং তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা মায়ের কাছে খুলে বলে। এ ঘটনায় গত ২৯ মার্চ কোতোয়ালী থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন মেয়েটির মা। 

মামলার প্রধান আসামি আব্দুস সালাম সিলেট নগরীর লালাদিঘীরপাড় ৭০ নম্বর বাসার গাজী আবদুর রহিমের ছেলে। তিনি ১১ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিলেন। অন্য আসামিরা হলেন- সিলেট নগরীর লালাদিঘীরপাড় ২৭ নম্বর বাসার ইশাদ মিয়ার ছেলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিলেট মহানগর কমিটির সদস্য আবদুল মনাফ (৩৮) ও ধর্ষণের ঘটনার সহযোগী নগরের ঘাসিটুলার মতিন মিয়ার কলোনির রেখা বেগম (৩০)। 

এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুস সালামকে বহিষ্কার করেছে মহানগর কমিটি। সেই সঙ্গে ওয়ার্ড কমিটিও বিলুপ্ত করেছেন মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ।

র‍্যাব জানানয়, র‍্যাবের হাতে আটকের পর গণধর্ষণের বিষয়ে ব্যাপক তথ্য দিয়েছে আব্দুস সালাম। এভাবে চাকরির প্রলোভন দিয়ে অসংখ্য তরুণীর সর্বনাশ ঘটিয়েছে আব্দুস সালাম। আর তাকে এই কাজে সহযোগিতা করতেন একই কলোনির বাসিন্দা রেখা বেগম।  বর্তমানে রেখা ও মনাফ পলাতক রয়েছেন।  আটক আব্দুস সালামকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মাসুদ আহমদ রনি/আরএআর