বগুড়া শহরে মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ৩৮টি ওষুধের গোডাউন ও মার্কেটের লিফট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ওষুধ ব্যবসায়ী মালিক সমিতি এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে শহরের সাতমাথার মেরিনা নদী বাংলা কমপ্লেক্সের ছয় তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট একযোগে কাজ করে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

মেরিনা নদী বাংলা কমপ্লেক্সের ওষুধ ব্যবসায়ী মালিক সমিতি জানায়, মার্কেটের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় ওষুধের দোকান। আর ষষ্ঠ তলায় ওষুধের গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করতেন ব্যবসায়ীরা। এখানে মোট ৪০টি গোডাউন আছে। 

এর মধ্যে সাইদুর রহমানের অভি মেডিসিন সবচেয়ে বড় গোডাউন। সেখানে আগুন লাগে। পরে আগুন ষষ্ঠতলার অন্যান্য গোডাউনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডে অভি মেডিসিনের পাশে থাকা পলক মেডিসিন, হিরা ফার্মেসি,  রফিক মেডিকেল, এসএম ফার্মেসি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

ব্যবসায়ীরা জানান, সম্ভবত সিগারেটের আগুন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল কিন্তু আগুনের কারণে ৬ তলায় যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করেন। 

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, আগুনের ভয়াবহতা কম ছিল। তবে ধোঁয়ার পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। এছাড়াও মার্কেটে সিঁড়ি রয়েছে একটি। ফলে চলাচলেও সমস্যা হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর এয়ার ব্লোয়ার দিয়ে ধোয়া বের করে দেওয়া হয়। মূলত এ কাজে সবচেয়ে বেশি সময় লেগেছে। 

আগুন লাগার খবর পেয়ে অভি মেডিসিনের মালিক ও অন্য ব্যবসায়ীরা ঘটনাস্থলে আসেন। অভি মেডিসিনের মালিক সাইদুর রহমান জানান, মার্কেটে তার গোডাউন সবচেয়ে বড়। আগুনে তার গোডাউনের সব ওষুধ পুড়ে গেছে। 

সাইদুরের ভাই মতিউর রহমান জানান, ভাইয়ের গোডাউনের পাশে আমার ওষুধের গুদাম। এই গোডাউনেরও সব ওষুধ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে। এছাড়া আশপাশের অধিকাংশ গুদামের ওষুধ আগুনের তাপে ও পানিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে। 

মেরিনা নদী বাংলা কমপ্লেক্সের ওষুধ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ৩৮টি গোডাউনের ওষুধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ভিজে মার্কেটের লিফট নষ্ট হয়ে গেছে। আরও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হচ্ছে। প্রতিটি গোডাউনে অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ওষুধ আছে। 

তিনি আরও জানান, মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু সেটি ব্যবহার করার সুযোগ হয়নি। আমরা ধারণা করছি কোনো ইলেকট্রিক সার্কিট নয় সিগারেটের আগুন থেকে এ ঘটেছে। 

বগুড়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক ম‌ঞ্জিল হক বলেন, প্রায় আড়াই ঘণ্টা কাজের পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনের থেকে ধোঁয়ার পরিমাণ বেশি ছিল। এজন্য সময় লেগেছে বেশি। পুরো ভবনটি আমরা ঘুরে দেখেছি। এখানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল। সিঁড়ি একটা ছিল। আগুনের সূত্রপাত তদন্ত সাপেক্ষে বলা হবে। 

 আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/আরএআর