খুলনায় জুট মিলের আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও রয়ে গেছে ক্ষতচিহ্ন
খুলনায় সালাম জুট মিলে লাগা আগুন ৮ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এলেও গেছে ক্ষতচিহ্ন। এখনো উড়ছে ধোঁয়া, থেমে থেমে জ্বলছে আগুন। ফলে অগ্নিনির্বাপণে বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকে চলছে ড্যাম্পিং ডাউনের কাজ। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন অগ্নিনির্বাপণে কাজ করছেন।
এর আগে বুধবার (২ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে লাগা আগুন ৮ ঘণ্টা পর রাত ২টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও নৌবাহিনীর চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে। রূপসার জাবুসায় অবস্থিত পাটকলটির চারটি গোডাউনে কাঁচা পাট ও প্রক্রিয়াজাত করা থাকা সব পাটই পুড়ে গেছে। আর যন্ত্রপাতিতে রয়েছে আগুনে পুড়ে যাওয়ার সেই ক্ষত। এতে শত কোটি টাকার বেশি ক্ষতির দাবি মালিকপক্ষের।
বিজ্ঞাপন
এর আগে বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রূপসা উপজেলার জাবুসায় পাটকলটি থেকে স্থানীয়রা আগুন দেখতে পেয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ও পরে একে একে মোট ১৪টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। যোগ দেয় নৌবাহিনীরও দুটি ফায়ার ইউনিট। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন মিলটির শ্রমিকসহ স্থানীয়রা।
খুলনা ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমে দায়িত্বে থাকা নুর হোসেন বলেন, আগুন রাতেই নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ড্যাম্পিং ডাউনের কাজ চলছে। ক্ষয়ক্ষতি বা আগুনের সূত্রপাতের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে পাটকলের ৩ নম্বর গুদামে আগুন লাগে। শুকনো পাট হওয়ায় দ্রুত আগুন কারখানায় সবখানে ছড়িয়ে পড়ে। এ জন্য আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বেগ পেতে হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় পাটকলে মজুত থাকা বিপুল পাট পুড়ে গেছে।
শ্রমিকরা জানায়, মিলটিতে প্রায় ৪০০ শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। ঈদের আগে আগুন লাগায় তাদের বেতন-বোনাস নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।
এদিকে মালিকপক্ষের দাবি, আগুনে কারখানার চারটি গোডাউনে রপ্তানির জন্য রাখা ৭৫০ মেট্রিক টন পাট ও ৩৫ হাজার মেট্রিক টন কাঁচাপাট পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। আগুনে প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জুট মিলের মালিক এম এম এ সালাম বলেন, আগুনে প্রায় ৭৫০ মেট্রিক টন রপ্তানি উপযোগী পাটজাত পণ্য, প্রায় ৩৫ হাজার মণ কাঁচা পাট এবং মিলের যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১২৫ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। কন্টিনেন্টাল ইনস্যুরেন্সে তার ৫০ কোটি টাকার ইনস্যুরেন্স করা ছিল বলে তিনি জানান।
খুলনা ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পাটের আগুন হওয়ায় নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে। আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণে ড্যাম্পিং ডাউনের কাজ চলছে।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর