অপহৃত ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় অপহরণের ৪৮ ঘণ্টা পরও সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনায় কোনো মামলাও হয়নি। তবে ঘটনার পর থেকেই তাকে উদ্ধারে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি। অপহরণকারী পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনের সন্ত্রাসীদের ওপর সর্বোচ্চ গোয়েন্দা নজরদারি রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। 

গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে তারাবির নামাজ চলাকালে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের একটি সশস্ত্র গ্রুপ রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংক শাখায় হানা দেয়। এ সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র লুট করে ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে মসজিদ থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। 

রুমা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শাহজাহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনের সন্ত্রাসীদের হামলা, অস্ত্র লুট, ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা করা হয়নি।

অপহৃত রুমা শাখা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের বড় ভাই চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা করা হয়নি। তার সঙ্গেও আমাদের কারও যোগাযোগ হয়নি। আমরা আমাদের ভাইকে ফেরত চাই। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ হতে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। 

মামলা না করার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা চাই না। আমরা ভাইকে সুস্থভাবে ফেরত চাই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের পরিবারের এক সদস্য জানান, কে বা কারা মোবাইল ফোনে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে কল করেছিল। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

এদিকে নিরাপত্তাজনিত কারণে বান্দরবানের রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলার সোনালী ব্যাংকের সকল কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন সোনালী ব্যাংকের বান্দরবান শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ওসমান গনি।

ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট ও ব্যাংক ম্যানেজারের অপহরণসহ সামগ্রিক বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনার পর উচ্চপর্যায়ের তদন্ত টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছে। আমরাও পরিদর্শন করেছি। তবে অপহরণকারীদের কারো সঙ্গেই এখনো কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাদের কোনো ধরনের দাবির বিষয়েও আমার জানা নেই।

তিনি জানান, ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারের জন্য যৌথবাহিনী মাঠে কাজ করছে। ইতোমধ্যে উপজেলার  ব্যাংকগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

শহিদুল ইসলাম/আরএআর