পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গাজীপুর, সাভার ও আশুলিয়াসহ আশপাশের কারখানাগুলো গতকাল সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে একসঙ্গে ছুটি ঘোষণা করে। ছুটি ঘোষণার পর ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট ও জনজট সৃষ্টি হলেও পরদিন মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যায়। এখন এই দুই মহাসড়কে কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তিতে যাত্রা করছেন ঘরমুখো যাত্রীরা।

গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ী কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা, জৈনাবাজার ও গাজীপুর মহাগরের চান্দনা-চৌরাস্তা স্টেশন রোড, চেরাগআলী, বোর্ডবাজার, সাইনবোর্ড এলাকায় গতকাল সোমবার দুপুর থেকে রাতভর যানবাহনের চাপ ছিল। এতে কোথাও কোথাও দীর্ঘ যানজটের তৈরি হলে ভোগান্তি বাড়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষের। মঙ্গলবার ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। এরপর উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনের চাপ অনেকটাই স্বভাবিক হতে থাকে এবং যাত্রীদের ভোগান্তি কমতে থাকে।

নাওজোড় হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদত হোসেন জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় সোমবার দুপুর থেকে রাতভর যানবাহনের ধীরগতি থাকলেও মঙ্গলবার সকালে কিছুটা কমতে শুরু করে। সকাল সাড়ে ১২টার দিকেও আশেপাশে যানবাহনের সারি থাকলেও থেমে থেমে যানবাহন চলে। এরপর থেকে পুরো পরিবেশ স্বাভাবিক হয়, বলা চলে কোনো ধরনের যানজট ছাড়াই চলাচল করছে গণপরিবহনসহ বিভিন্ন পরিবহন।

ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল বলেন, ভোরের দিকে ঢাকা থেকে গাজীপুরের কাপাসিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হই। আমাদের বাসটি মহাসড়কের কয়েকটি অংশে যানজটে আটকে যায়। পরে দুপুর ১২টার দিকে কাপাসিয়ায় গিয়ে বাসটি পৌঁছে। ১২টার পর ঢাকা থেকে আমার আরেক স্বজন কাপাসিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলেও তার সড়কে খুব বেশি একটা সময় লাগেনি।

পরিবার নিয়ে টঙ্গী থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন এক গার্মেন্টস শ্রমিক মোতাহার হোসেন। তিনি বলেন, সকালে ভিড় থাকায় আমরা যাত্রা বাতিল করেছিলাম। পরে দুপুরের দিকে ভিড় কমে যাওয়ায় আমরা নির্বিঘ্নে যাতায়াত করছি, পুরো সড়কে এখনো কোথাও খুব বেশি সময়ের জন্য বা যানজটের জন্য বাস দাঁড়ায়নি। 

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক রুটে চলাচলকারী আল-আমিন পরিবহনের সুপারভাইজার সাখাওয়াত বলেন, ঈদে ময়মনসিংহ বাইপাস থেকে গাজীপুর বাইপাস বা গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রতিনিয়ত চলাচল করেছি। গতকালের তুলনায় মঙ্গলবার সকালে ভিড় থাকলেও বেলা বাড়ার বাড়ার সঙ্গে তা কমতে শুরু করে। সন্ধ্যায় পর চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ভিড় আবার বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, মহানগর এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্পটে গতকাল সোমবার দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গাড়ির প্রচণ্ড চাপ ছিল। কিন্তু কোন যানজট ছিল না। মঙ্গলবার সকালে চান্দনা-চৌরাস্তা ফ্লাইওভারের নিচে ঢাকামুখী গাড়ি মাঝে মধ্যেই কিছুটা জটলা তৈরি হলেও তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে ময়মনসিংহগামী গাড়ি চলাচলে কোনো সমস্যা নেই।

শিহাব খান/আরএআর