পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে সিলেট মহানগরীর বঙ্গবীর এমএজি ওসমানী শিশু উদ্যানে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। সিলেট মহানগরীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই শিশু উদ্যানে নানা বয়সী মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। হাজারো দর্শনার্থীতে মুখরিত হয়েছে শিশু উদ্যানটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার (১১ এপ্রিল) বিকেল ৩টার পর থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন আসতে শুরু করে এই শিশু উদ্যানে। প্রায় দুই যুগ আগে নির্মিত এই শিশু উদ্যানটিতে প্রতি বছরই বিভিন্ন উৎসব-পার্বণে ভিড় লেগেই থাকে। এখানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে প্রায় ২২টি রাইড। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে রয়েছে বাম্পার কার, রোলার কোস্টার ও লাইভ ম্যাজিক শো। এছাড়াও রয়েছে নাগরদোলা, ময়ুর রাইড, ইলেকট্রিক ট্রেইন, এয়ার সাইকেল, বিভিন্ন রকমের স্লিপার, হর্স রাইড, ফ্লাওয়ার রাইডসহ নানা ধরনের রাইড।

ওসমানী শিশু উদ্যানে দায়িত্বরত শাহিন আহমদ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের এখানে প্রায় ২২টি রাইড উপভোগ করতে পারেন। এর মধ্যে ২০টি রাইডের টিকিটের মূল্য ৩০ টাকা করে। আর রোলার কোস্টার ও বাম্পার কার রাইড ৫০ টাকা করে। শিশু পার্কটিতে প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা করে। এখানে সর্বমোট ৮২ জন কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে ৪২ জন স্থায়ীভাবে আর বাকিরা ঈদ উপলক্ষ্যে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রবেশ টিকিট বিক্রির কাউন্টারে টিকিট কিনতে আসা নগরীর দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ মখলিসুর রহমান রাসেল ঢাকা পোস্টকে জানান, আমি আমার ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছি। টিকিট কাউন্টারে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে টিকিট করলাম। এখন শিশুপার্কের ভেতরে প্রবেশ করে তাদের ঘুরে ঘুরে দেখাবো।

নাগরদোলা চড়তে আসা শিশু দর্শনার্থী তাহমিনা ইসলাম জানায়, আজ ঈদের দিন অনেক মজা করছি। আমার আব্বু আম্মু আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। আমি বারবার এখানে আসতে চাই।

শিশু উদ্যানের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের দায়িত্বে থাকা শাহনাজ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এইটা গরিবের পার্ক নামে পরিচিত। প্রায় দুই যুগ থেকে আমরা শিশুদের সুস্থ বিনোদন দিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন দিবসে এখানে অনেক লোকের সমাগম হয়। এই জায়গা অনেক নিরাপদ। আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন খুবই অ্যাক্টিভ। এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

তিনি আরও বলে, বিজয় দিবস-স্বাধীনতা দিবসে আমরা ফ্রি রাইডের ঘোষণা দেই। এ ছাড়াও সুবিধাবঞ্চিত লোকদের জন্য আমরা যে কোনো সময় প্রবেশ ও রাইড ফ্রি দিয়ে থাকি। প্রয়োজনে অনেক সময় আমরা তাদেরকে খাবারও দেই। পরিচালনা পর্ষদ থেকে সবসময়ই দর্শনার্থীদের প্রায়োরিটি দেওয়া হয়। আজ ঈদের দিন পাঁচ হাজারের অধিক লোকের সমাগম হয়েছে। আগামী দুই-তিন দিনে এই সংখ্যা সর্বোমোট ১০ হাজার ছাড়াবে।

আরএআর