নিহত বিল্লাল ও তার স্ত্রী

ঈদের দিন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্ব স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন গ্রামের বাড়িতে। কিন্তু সদরঘাটে লঞ্চ দুর্ঘটনায় লাশ হয়ে ফিরলেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বিল্লাল হোসেন (২৮), তার স্ত্রী মুক্তা বেগম  (২২) ও চার বছরের শিশু সন্তান মাইশা।  

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে ঢাকা থেকে উপজেলার ৪নং দাউদখালী ইউনিয়নের দ্রেবত্র গ্রামে তাদের মরদেহ পৌঁছায়। এরপর সকাল ১০টায় জানাজা শেষে স্ত্রী মুক্তা ও মেয়ে মাইশার মরদেহ মুক্তার বাবার বাড়িতে এবং বিল্লালকে মামার বাড়িতে দাফন করা হয়।

নিহত মুক্তার ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা চেয়েছিলাম বিল্লাল, মুক্তা ও মাইশা তিনজনের লাশ আমাদের বাড়িতে পাশাপাশি দাফন করতে। কেননা বিল্লালের বাড়িতে তিনজনকে দাফন করার মতো জমি নেই। কিন্তু বিল্লালের মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলের মরদেহ তাদের বাড়িতে দাফন করা হবে। তাই বিল্লালের মরদেহ সেখানে এবং মুক্তা ও মাইশাকে আমাদের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।

নিহত বেল্লালের চাচাতো ভাই কামরুল মুন্সি জানান, বিল্লাল স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ঢাকার গাজীপুরে থাকতেন। সেখানে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ঈদের ভিড় এড়াতে সদরঘাট যান স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে মায়ের সঙ্গে ঈদ করবেন বলে। বিল্লাল বাবাকে হারিয়েছেন বেশ কয়েক বছর আগে। বেঁচে আছেন কেবল মা আলেয়া বেগম। মা থাকেন গ্রামে। ঈদের সময় ছুটি পেয়ে বিল্লাল প্রতিবার ঈদ করতে গ্রামে আসেন। ১৫ রোজায়ও গ্রামে আসেন তিনি। মাকে বলে যান ঈদে আসবেন। তবে স্ত্রী মুক্তা বেগম ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ঈদের আগে বাড়িতে আসেননি। ঈদের দিন যাত্রীর চাপ কম থাকবে বলে এদিন বাড়ি আসার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু কে জানতো এই যাত্রায় হবে তাদের শেষ যাত্রা।

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল কাইয়ূম জানান, তাদের পারিবারিক অবস্থা খুব একটা ভালো না। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

আরএআর