নিহত রিয়াদ আহমেদ রাজু. তার ভায়রা জুয়েল রানা ও ছেলে রামিন আরিদ

মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড় এলাকায় পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ বাবা ও খালুর মরদেহ উদ্ধারের ১৩ ঘণ্টা পর স্কুলছাত্র রামিন আরিদের (১৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রামিন আরিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সে ঢাকাস্থ মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র। ঘটনাস্থলের অদূরে তার মরদেহ ভেসে উঠলে ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশ উদ্ধার করে। 

এর আগে গতকাল শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিখোঁজ রামিনের বাবা রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রিয়াদ আহমেদ রাজু এবং খালু ব্যাংক কর্মকর্তা জুয়েল রানার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের মরদেহ রাতেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঈদের ছুটিতে পদ্মা নদীতে ঘুরতে গিয়ে গোসলে নেমে শুক্রবার বিকেলে নিখোঁজ হয়েছিলন এই তিনজন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত রেলওয়ে কর্মকর্তা রিয়াদ আহমেদ রাজু টংগিবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামের হারুন রশিদ মোল্লার একমাত্র ছেলে। তাদের দিঘীরপাড় গ্রামের বাড়ি প্রায় দুই যুগ আগে পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার পরে তারা ঢাকার মোহাম্মদপুরের সলিমুল্লাহ রোড এলাকার বসবাস করে আসছিলেন। এ বছর হজ করতে সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল রাজুর। সে উপলক্ষ্যে চাচা ইকবাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে বেশনাল গ্রামের  বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তিনিসহ তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন মিলে ৩০ থেকে ৩৫ জন চাচার বাড়িতে এসে পৌঁছান। পদ্মা নদীতে ঘুরা শেষে সন্ধ্যায় ঢাকায় ফেরার কথা ছিল তাদের।

অন্যান্য আত্মীয়ের সঙ্গে রিয়াদ আহমেদ রাজুর স্ত্রী, তার তিন ছেলে ও তার ভায়রা ওয়ান ব্যাংকের কর্মকর্তা জুয়েল রানা ও তার স্ত্রী, দুই ছেলেসহ মোট ৩০-৩৫ জন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইকবাল হোসেনের বাড়ি থেকে বের হন। পরে তারা দিঘীরপাড় এলাকার পদ্মা নদীর ঘাট থেকে ট্রলার ভাড়া নিয়ে প্রথমে হাসাইল বাজার এলাকায় যান। পরে হাসাইল থেকে ফিরে উপজেলার ধানকোড়া এলাকার পদ্মা নদীর চরে নামেন। পদ্মার চরে নেমে তারা পাশের নদীতে তিনজন‌ ছাড়া বাকি সবাই গোসল করতে নামেন। এ সময় অল্প পানিতেই তারা গোসল করছিলেন। হঠাৎ করে এক শিশু পদ্মা নদীর মধ্যে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে তাকে উদ্ধার করতে যান সাতজন। এদের মধ্যে ওই শিশুকে উদ্ধার করে চারজন ফিরে আসলেও নিখোঁজ হন রিয়াদ আহমেদ রাজু, তার ছেলে রামিন ও ভায়রা জুয়েল রানা। পরে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।  

টংগিবাড়ী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ মোস্তফা কামাল জানান, শনিবার সকাল ৯টা থেকে পুনরায় দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার কাজ শুরু হয়। সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থলের অদূরে রামিনের মরদেহ ভেসে উঠলে ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশের সদস্যরা মরদেহ উদ্ধার করেন। এ নিয়ে এ ঘটনায় নিখোঁজ তিনজনেরই মরদেহ উদ্ধার শেষে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।

ব.ম শামীম/আরএআর