সোমালিয়ার জলদস্যুদের মুক্তিপণ দিয়ে জিম্মি ২৩ নাবিক ও এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ মুক্ত করা হয়েছে। নাবিকদের জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হওয়ার খবরে জয় মাহমুদের পরিবারে আনন্দের বন্যা বইছে। দীর্ঘ এক মাস পর সন্তানের মুক্তির খবরে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান তার বাবা-মা। সোমবার (১৫ এপ্রিল) জয় মাহমুদের বাবা জিয়াউর রহমান নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন।

জিয়াউর রহমান বলেন, ছেলে মুক্তি পাওয়ার পর ফোন দিয়ে ভোরে আমাদের জানান। ছেলে ফোন দিয়ে যখন বলেছে চিন্তা করার দরকার নেই, তখন থেকে কিছুটা স্বস্তিতে আছি। ঈদের দিনেও আমাদের বাড়িতে কোনো আনন্দ ছিল না। সন্তান যদি অস্ত্রের মুখে থাকে আমরা কীভাবে ভালো থাকতে পারি। ছেলে ছাড়া পেয়েছে শোনার পর থেকেই বাড়িতে সবার মুখে হাসি ফুটেছে।

জয় মাহমুদের মা আরিফা বেগম বলেন, ঈদের দিন তেমন রান্না-বান্নাও করিনি। আল্লাহর কাছে শুধু দোয়া করতাম, আল্লাহ আমার কথা রেখেছেন। আমার ছেলে মুক্তি পেয়েছে, এর থেকে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। ছেলে মুক্তি পেয়েছে এটাই আমাদের ঈদ।

জিম্মি অবস্থা থেকে ছেলেকে মুক্ত করায় সরকার ও জাহাজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্রুত তার সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে অনুরোধ জানান জয় মাহমুদের মা আরিফা বেগম।

জয় মাহমুদের চাচাতো ভাই মারুফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার পর জয় ভাই প্রথমে আমাকে একটি মেসেজে জানায়। আবার যখন মুক্ত হয় সেই খবরও আমাকে প্রথমে ফোন দিয়ে বললে আমি চাচা-চাচিকে জানাই। জলদস্যুদের হাতে জয় ভাই জিম্মি হওয়ার পর থেকেই আমাদের বাড়িতে সবাই দুশ্চিন্তায় ছিল। ঈদের দিনেও বাড়িতে কারো মুখে হাসি ছিল না। তবে মুক্তির খবর পাওয়ার পর থেকে সবাই অনেক আনন্দিত।

পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য মজিবর রহমান বলেন, জয় মাহমুদের জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তির খবরে তার পরিবারের সঙ্গে এলাকাবাসীও খুশি হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব জয়সহ সকল জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনা হোক।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজকে জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এরপর তারা মুক্তিপণ দাবি করে। দীর্ঘ এক মাস পর মুক্তিপণ পেয়ে ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজকে মুক্ত দিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। তবে কত মুক্তিপণে জলদস্যুরা নাবিকদের মুক্ত করেছে তা মালিকপক্ষ ও বিমা কোম্পানি কেউ প্রকাশ করেনি। তবে সোমালিয়ার কয়েকটি গণমাধ্যম বলছে মুক্তিপণ হিসেবে জলদস্যুরা ৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি নিয়েছে।

গোলাম রাব্বানী/এএএ