হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ফুটবল খেলা দেখতে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে ফুটবলপ্রেমী দর্শকরা ভিড় করেছেন। ব্যারিস্টার সুমনকে একনজর দেখতে ও তার ফুটবল খেলা উপভোগ করতে তীব্র তাপদাহের মধ্যেও হাজার হাজার দর্শক মাঠে উপস্থিত হয়েছেন। 

শুক্রবার(১৯ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বহরপুর রেলের মাঠে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

জানা গেছে, বহরপুর রেলের মাঠে এই প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেছে বহরপুর বি.এন.বি.এস আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটি। এ প্রীতি ফুটবল ম্যাচে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমির সাথে প্রতিপক্ষ হয়ে খেলবে শক্তিশালী মাগুরা জেলা ফুটবল একাদশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঐতিহ্যবাহী বহরপুর রেলের মাঠে খেলা শুরু হওয়ার আগেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। ২০ টাকা টিকিট কেটে রাজবাড়ী জেলা ও জেলার বাইরে পার্শ্ববর্তী জেলা মাগুরা ও কুষ্টিয়া থেকেও দর্শকরা মাঠে এসে হাজির হয়েছেন। তীব্র তাপদাহের মধ্যে প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করেও শত কষ্টের মাঝেও দর্শকরা খেলা উপভোগ করতে আসেন। তবে মাঠের চারপাশে দর্শকদের জন্য বসার ব্যবস্থা না থাকায় এবং মাঠের চারপাশ খোলা হওয়ায় দর্শকদের খেলা দেখতে অসুবিধা হচ্ছে বলে অনেকে জানান।

খেলা দেখতে আসা বালিয়াকান্দির নারুয়া ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের মাসরুর রহমান বলেন, ব্যারিস্টার সুমনের খেলা এতদিন শুধু টিভিতে ও ফেসবুকেই দেখে এসেছি। আজ তার ফুটবল খেলা সামনাসামনি দেখার সুযোগ হয়েছে। এজন্য শত কষ্ট হলেও রোদের মধ্যে খেলা দেখতে এসেছি। এটা ভেবে ভালো লাগছে যে সামনাসামনি ব্যারিস্টার সুমনের খেলা দেখবো আজ।

পাংশা কলিমহর ইউনিয়ন থেকে খেলা দেখতে সজল আহমেদ তার বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন বহরপুর রেলের মাঠে। তিনি বলেন, প্রায় ২০ কিলোমিটার দূর থেকে বন্ধুদের সাথে নিয়ে আজ ব্যারিস্টার সুমনের ফুটবল খেলা দেখতে এসেছি। মাঠে প্রচুর দর্শক হয়েছে। এমন দর্শকমুখর পরিবেশে খেলা আমি এর আগে কখনো দেখিনি।

আজিজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, ফরিদপুরের মধুখালী থেকে শুধুমাত্র ব্যারিস্টার সুমনের ফুটবল খেলা দেখতে এসেছি। এই প্রখর রোদের মধ্যে শুধুমাত্র তার ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখার জন্য আমরা ছুটে এসেছি।

বহরপুর  বি.এন.বি.এস আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো আবুল কালাম আজাদ বলেন, ফুটবল খেলা গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। আগে একটি গ্রামে ফুটবল খেলার আয়োজন করলে আশেপাশের আরও কয়েক গ্রাম থেকে হাজার হাজার দর্শক আসতো খেলা দেখতে। কিন্তু বর্তমানে সেটা দেখা যায় না।

কালের বিবর্তনে এ খেলা হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য ও মানুষের মাঝে বিনোদন দেওয়ার জন্য এ খেলার আয়োজন করেছি। এই প্রীতি ফুটবল খেলায় ব্যারিস্টার সুমন তার ফুটবল একাডেমি নিয়ে খেলতে আসছেন। আমরা খুবই আনন্দিত ও খুশি এই কারণে যে আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি এসেছেন। মাঠে প্রচুর দর্শকের সমাগম হয়েছে। আশা করছি একটি সুন্দর খেলা উপভোগ করতে পারব।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ব্যারিস্টার সুমন মাঠে ঢুকেই ওয়ার্ম আপ শুরু করেন এবং মাঠ ঘুরে দর্শকদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে তিনি সকল দর্শকের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আজকে এই মাঠে তিনজন এমপি থাকার কথা ছিল। কিন্তু এখানে আমরা দুজন আছি। আজকে ৩৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা। এত তাপমাত্রার মধ্যে আমাদের এমপিদের এখানে থাকার কথা না তারপরও শুধু ফুটবলের টানে এখানে এসেছি। আমরা আমাদের এলাকায় এমপি হিসেবে সফল হলেও আমাদের ফুটবল যদি ডুবে যায় এর প্রভাব আমাদের ওপর পড়বে। এই জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, এই যে ঘামতেছি তারপরও আমরা কাছে মনে হয়েছে ফুটবলটা যদি আগায়। ফুটবলটা আমাদের আইসিইউতে চলে গেছে। প্রতি সপ্তাহে আমরা কোন না কোনো জেলায় যাচ্ছি। রাজবাড়ীতে আমার দ্বিতীয় বার আসা। বালিয়াকান্দি এলাকার দর্শকদের দেখে আমার এত ভালো লাগতেছে তাদের মুখের দিকে তাকালে বুঝা যায় ফুটবলের প্রতি তাদের অনেক প্রেম। অথচ এই প্রেমটাকে নষ্ট করে আমরা ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে ফেলছি।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/আরএআর