গাজীপুর মহানগরীর দেশীপাড়া এলাকায় হারুন অর রশিদ নামে এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাশেদুজ্জামান মাসুম নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মীর বিরুদ্ধে।  শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে প্রকাশ্যে শর্টগান উঁচিয়ে প্রতিপক্ষ হারুন অর রশিদকে জমির খুঁটি তুলে ফেলতে হুমকি দিয়েছেন তিনি। 

রাশেদুজ্জামান মাসুম নিজেকে নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী বলে পরিচয় দেন। তবে তিনি বর্তমানে কোনো কমিটিতে নেই বলে জানা গেছে।  

ভুক্তভোগী হারুন অর রশিদ বলেন, দেশীপাড়া মৌজায় আমার নানা জমির উদ্দিন মুন্সি ও নানি শুকুর জান বিবি ১ একর ৪২ শতাংশ জমির মালিক। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে স্থানীয় ফজল হাজীর ছেলে রাশেদুজ্জামান মাসুম (৪৫) ও বুলু হাজীর ছেলে সাইম (২৫) এবং তাদের পরিবারের লোকজন সেই জমি দখল করে রেখেছে। এ বিষয়ে ইতোপূর্বে স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের জানিয়ে আপস/মীমাংসার চেষ্টা করলেও মাসুম গং তাদের কথা কর্ণপাত করেনি। এমতাবস্থায় ২০১৯ সালে গাজীপুর সদরের সহকারী কমিশন (ভূমি) অফিসে বিবিধ মিস মোকাদ্দমা দায়ের করি। এতে আমাদের পক্ষে রায়ও হয়। এমতাবস্থায় শনিবার সকালে আমি এবং আমার পরিবারের লোকজন সার্ভেয়ার দ্বারা ওই জমি মেপে খুঁটি পুঁততে গেলে তারা সশস্ত্র অবস্থায় আমাদের জমিতে ঢুকে জমি মাপের কাজে বাধা দেয়। তারা কয়েকজন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক নিয়ে আমাদের জমিতে পোঁতা মাপের খুঁটি তুলে ফেলতে এবং জমি থেকে চলে যেতে বলেন। একপর্যায়ে মাসুম বলে ‘খুটি তোল, নইলে গুলি করমু’। সে আমার বুকে-মাথা শর্টগানের নল ধরে। এ সময় আমরা তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে কিল-ঘুষি ও হতাহাতি করে। আমার ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা অস্ত্র উঁচিয়ে আমাকে খুন কিংবা মামলায় জড়িয়ে জেল খাটানোর হুমকি দিয়ে আমাদের তাড়িয়ে দেয়।

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় রাশেদুজ্জামান মাসুমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আপনি ছবি বা ভিডিও ফুটেজ পাইছেন? ভিডিও ফুটেজটা পাইলে আপনি ভালো মতো দেখেন পুরাটা। দেখলে আমার মনোভাব কেমন ছিল দেখতে পারবেন। 

তিনি বলেন, আমি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, আমি পৈতৃক ওয়ারিশমূলে ওই জমির মালিক। আমার জমি জবরদখল করতে এসেছিল, আমার নিরাপত্তার জন্য আমার লাইসেন্স করা অস্ত্রটা গাড়ি থেকে আমার হাতে করে নিয়ে আমি ওইখানে গেছি। যারা আমার জমিতে অবৈধভাবে আসছিল, তারা ওই জমির মালিক না। আমরা ক্রয়সূত্রে ওই জমির মালিক। আমি ইতোমেধ্য আপনাদের প্রেসক্লাবের সভাপতি থেকে শুরু করে সাধারণ সম্পাদক যারা আছে সবাইকে জানাইছি। থানাকে আমি অবগত করছি, আমি থানায় একটা অভিযোগও করছি। আমি একটু পর থানায় যাব ওসি সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে। 

রাশেদুজ্জামান মাসুম দাবি করেন, তার ১২ বোরের শর্টগানটির লাইসেন্স আছে। ওই লাইসেন্সকৃত অস্ত্রটি নিয়েই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন।

গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সঞ্জিত কুমার মল্লিক বাবু বলেন, মহানগরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে কমিটি আছে। ওই কমিটিতে রাশেদুজ্জামান মাসুম নামে কেউ নেই। তাকে আমি চিনিও না। সংগঠনের কেউ না হয়েও সে যদি নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ রাফিউল করীম বলেন, শর্টগান নিয়ে জমি মাপার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি আমার নজরেও এসেছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিহাব খান/আরএআর