যমুনা নদীর ওপর দীর্ঘতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর ৮৪ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর সর্বশেষ ৪৯তম স্প্যানটি বসানোর মধ্যে দিয়ে মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। ফলে পুরো রেলসেতু এখন দৃশ্যমান। অবশিষ্ট কাজ শেষ হলেই চলতি বছরের ডিসেম্বরে কিংবা ২০২৫ সালের শুরুর দিকে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সেতুর পশ্চিম অংশের ৫ থেকে ৬ নম্বর পিলারে ৪৯তম স্প্যান বসানো হয়। এতে দেশের সবচেয়ে বড় ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ কাজ ৮৪ শতাংশ শেষ হয়েছে। এখনো রেলসেতুর কিছু কাজ বাকি রয়েছে। রেলসেতুতে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণও শেষের দিকে। আগস্ট মাসে পুরো কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরীক্ষামূলক সব কাজ শেষ করে আগামী ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরবঙ্গের দীর্ঘদিনের স্বপ্নের এই রেলসেতু উদ্বোধন করবেন। 

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে বর্তমানে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে প্রতিদিন ৩৯টি ট্রেন পারাপার হয়। এতে সময় অপচয়ের পাশাপাশি শিডিউল বিপর্যয় দেখা দেয়। তবে নতুন রেল সেতুর কাজ শেষ হওয়ার পর ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ৮৮টি ট্রেন চলাচল করবে। সেতুটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই জয়েন্টভেঞ্চার। প্রতিষ্ঠান দুটি পৃথকভাবে সেতুর পূর্ব ও পশ্চিমে ভাগ করে কাজ করছে।

রেলওয়ে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু নির্মাণে প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা দাঁড়ায়। এর মধ্যে দেশীয় অর্থায়ন ২৭.৬০ শতাংশ। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। যা প্রকল্পের ৭২.৪০ শতাংশ। বর্তমানে রেল সেতুর ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া সেতুর দুইপাশের ১৩ কিলোমিটার রেললাইনের কাজ শেষ হয়েছে ৫০ শতাংশ। এ ছাড়া নদী শাসনের কাজ ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি ২০ শতাংশ কাজ চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান বলেন, মূল সেতুর অবকাঠামোর কাজ শেষ, ফলে দৃশ্যমান হয়েছে রেলসেতুটি। অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ করে টেস্টিং, কমিশনিং করে ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের দিকে সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। 

অভিজিৎ ঘোষ/এএএ