চলমান তীব্র দাবদাহে জনমানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। কিন্তু জীবিকার তাগিদ যেন মানে না কিছুই। এমন সময় বগুড়ার ব্যস্ত শহরের সাতমাথায় এক গ্লাস শীতল শরবত স্বস্তি এনে দিয়েছে খেটে খাওয়া মানুষসহ পথচারীদের।

রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথার জিলা স্কুলের ফটকের পাশে দেখা মিলে এই উদ্যোগের। সাধারণ মানুষদের জন্য বিনামূল্যে শরবত পানের এ আয়োজন করেন এপেক্স ক্লাব অব বগুড়ার সদস্যরা।

আয়োজকরা জানান, তীব্র গরমে মানুষদের প্রধান চাহিদা থাকে পানির প্রতি। কিন্তু শুধু পানি তৃষ্ণার চাহিদা মিটাতে পারে না, শরবত এখানে ভালো কাজ করে। তবে খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেটি ব্যয়বহুল। এ জন্য একবেলা শরবত পানের আয়োজন করা হয়।

দুপুরে জিলা স্কুলের সামনে দেখা যায় আয়োজকরা একটি বড় পাতিলে লেবুর শরবত তৈরি করে নিয়ে এসেছেন। তারা গ্লাসে ঢেলে সাধারণ মানুষদের মাঝে তা বিতরণ করছেন। এ সময় রিকশাওয়ালা, পথিক, নারী-শিশু, বৃদ্ধরা শরবত পান করেন।

শাজাহানপুর উপজেলার বাসিন্দা ও রিকশাওয়ালা আব্দুল জলিল ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন খুব গরম। গরমে আমরা চলতে পারছি না। রিকশা চালানো খুব কষ্টের। এই শরবত খেয়ে খুব ভালো লেগেছে, আরাম হচ্ছে। যারা শরবত খাইয়েছে তাদের ভালো হোক।

রাশেদা নামের এক নারী খড়ি কুড়িয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। শরবত দেখে তিনিও পান করেন। জানালেন, শরবত খেয়ে জানটা শান্তি হলো। এই শরবত কিনে খেলে ১০ টাকা লাগতো।

এপেক্স ক্লাব বগুড়ার সার্ভিস ডিরেক্টর মহরম আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, তীব্র গরমে সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দিয়েছে। মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। আর বিভিন্ন কাজে যারা আছেন সেখানে হিমশিম খাচ্ছে। রিকশাওয়ালারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রিকশা চালাচ্ছে। এই যে পথচারীরা কষ্ট পাচ্ছে। লোকজন বের হচ্ছে কম, ভাড়াও পাচ্ছে কম। আবার এক গ্লাস শরবতের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা। আমরা চিন্তা করলাম এক দিনও যদি তাদের শরবত তুলে দিতে পারি তাহলে কিছুটা সেবা করতে পারব। তাদের কলিজাটা ঠান্ডা করতে পারব।

এই উদ্যোগ চলমান থাকবে বলে জানান মহরম আলী।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ রোববার রাজশাহী বিভাগের পাবনায় সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা। পাবনার ঈশ্বরদীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহীতে ৪১ দশমিক ৫, বগুড়ায় ৩৭ দশমিক ৮, বদলগাছীতে ৩৭, তাড়াশে ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, রাজশাহীসহ খুলনা বিভাগে তাপপ্রবাহ বইছে। এই তাপপ্রবাহ আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে।

আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/এমজেইউ