গাজীপুরে অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি দেওয়া সেই স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী মাসুমের অস্ত্র জব্দ করেছে পুলিশ। রোববার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) আবু তোরাব মোহাম্মদ শামসুর রহমান।

তিনি বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধে শনিবার দুপুরে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করেন রাশেদুজ্জামান মাসুম। বিষয়টি পুলিশের নজরে আসার পর রাতেই অস্ত্রটি থানায় এনে জব্দ করা হয়।

যেহেতু লাইসেন্স করা অস্ত্র, অবৈধ অস্ত্র নয়, তাই থানায় মামলা হয়নি। যেহেতু প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরাফেরা করেছে বা ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে, এ জন্য আমরা একটি জিডি করেছি। জিডি করে কোর্টে তদন্তের অনুমতির জন্য পাঠিয়েছি। কোর্টের অনুমতি পেলে তদন্ত করে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জিএমপি সদর থানা পুলিশের ওসি সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই অস্ত্রটি উদ্ধার করেছি। এটি তার (মাসুমের) লাইসেন্স করা অস্ত্র। কিন্তু প্রকাশ্যে ওই অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষকে গুলি করার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে তার অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের জন্য আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছি। একই সঙ্গে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষেপে সাধারণ ডায়েরি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে গাজীপুর মহানগরের দেশীপাড়া এলাকায় হারুন অর রশিদ নামে এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাশেদুজ্জামান মাসুম নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগকর্মীর বিরুদ্ধে। প্রকাশ্যে শর্টগান উঁচিয়ে প্রতিপক্ষ হারুন অর রশিদকে জমির খুঁটি তুলে ফেলতে হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।
রাশেদুজ্জামান মাসুম নিজেকে নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী বলে পরিচয় দেন। তবে তিনি বর্তমানে কোনো কমিটিতে নেই বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় রাশেদুজ্জামান মাসুমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আপনি ছবি বা ভিডিও ফুটেজ পাইছেন? ভিডিও ফুটেজটা পাইলে আপনি ভালো মতো দেখেন পুরাটা। দেখলে আমার মনোভাব কেমন ছিল দেখতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, আমি পৈতৃক ওয়ারিশমূলে ওই জমির মালিক। আমার জমি জবরদখল করতে এসেছিল, আমার নিরাপত্তার জন্য আমার লাইসেন্স করা অস্ত্রটা গাড়ি থেকে আমার হাতে করে নিয়ে আমি ওইখানে গেছি। যারা আমার জমিতে অবৈধভাবে আসছিল, তারা ওই জমির মালিক না। আমরা ক্রয়সূত্রে ওই জমির মালিক। আমি ইতোমেধ্য আপনাদের প্রেসক্লাবের সভাপতি থেকে শুরু করে সাধারণ সম্পাদক যারা আছে সবাইকে জানাইছি। থানাকে আমি অবগত করছি, আমি থানায় একটা অভিযোগও করছি। আমি একটু পর থানায় যাব ওসি সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে।

রাশেদুজ্জামান মাসুম দাবি করেছিলেন, তার ১২ বোরের শর্টগানটির লাইসেন্স আছে। ওই লাইসেন্সকৃত অস্ত্রটি নিয়েই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন।

গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সঞ্জিত কুমার মল্লিক বাবু বলেন, মহানগরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে কমিটি আছে। ওই কমিটিতে রাশেদুজ্জামান মাসুম নামে কেউ নেই। তাকে আমি চিনিও না। সংগঠনের কেউ না হয়েও সে যদি নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিহাব খান/এমএএস