নোয়াখালীর সুবর্ণচরে তীব্র গরমে মাঠে কাজ করা কৃষকদের হাতে পানি, স্যালাইন ও জুস পৌঁছে দিয়েছে জেলা পুলিশ। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ফসলের মাঠে গিয়ে পানি, স্যালাইন ও জুস বিতরণ করেন পুলিশ সদস্যরা। 

জানা যায়, বৈশাখের খরতাপে কয়েক দিন ধরেই হাঁসফাঁস করছে মানুষ। দাবদাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই তীব্র গরমে কৃষক ও শ্রমিকদের কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। এদিকে কাজ না করলে খাবারও জুটবে না। তাই পেটের দায়ে গরম উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েছেন তারা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে প্রচণ্ড রোদে জমিতে ধান কাটছিলেন কৃষকরা। এ সময় তাদের মুখে হাসি ফোটাতে জুস, পানি ও স্যালাইন হাতে সেখানে হাজির হন নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোর্তাহীন বিল্লাহ ও চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম। তপ্তদুপুরে অনাকাঙ্ক্ষিত এমন উপহার পেয়ে খুশি কৃষকরা 

কৃষক আব্দুল গনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল থেকে প্রচুর গরম। পেটের দায়ে ধান কাটতে আসছি। একদিকে ধানের গরম অন্যদিকে সূর্যের গরম। আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছিল। হঠাৎ করে পুলিশ সদস্যরা এসে আমাদের পানি, জুস ও স্যালাইন দিল। সাথে সাথেই খেলাম। আলহামদুলিল্লাহ ভালো লাগলো।

শহিদ নামে আরেক কৃষক ঢাকা পোস্টকে বলেন, কাজ না করলে খামু কী? তাই ধান কাটতাসি। তবে পুলিশের স্যাররা যে এমন উপহার দেবে তা স্বপ্নেও ভাবি নাই। গরমে স্যালাইন, পানি, জুস খেয়ে খুব ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ নোয়াখালী জেলা পুলিশকে।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোর্তাহীন বিল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, অন্যান্য পরিশ্রমের মধ্যে ধান কাটা কঠিন পরিশ্রম। ভরদুপুরে তাপমাত্রা যখন প্রায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তখন ফসলের মাঠে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব এক ব্যাপার। অথচ সেই তাপে কৃষক ধান কাটছেন। তাই নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপারের মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান স্যারের পক্ষ থেকে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে জুস, পানি ও স্যালাইন পৌঁছে দিয়েছি। পুলিশ সুপার স্যার গতকাল ট্রাফিক পুলিশ, পথচারী, চালক ও শ্রমজীবী মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি, খাবার স্যালাইন ও জুস বিতরণ করেছেন। নোয়াখালী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। 

চরজব্বর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সুবর্ণচরকে নোয়াখালীর শস্যভাণ্ডার বলা হয়। সকল মৌসুমে এখানে অনেক ফসল হয়। বর্তমানে তীব্র গরমে কৃষক ধান কাটছে। পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশনায় এবং সার্কেল স্যারকে সাথে নিয়ে আজকে কৃষকের ধান ক্ষেতে গিয়ে তাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি, খাবার স্যালাইন ও জুস বিতরণ করা হয়েছে। কৃষক ও শ্রমজীবীরা অনেক খুশি হয়েছেন।

এ বিষয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, টানা দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড গরমে বেড়েছে সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষের ভোগান্তি। তবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। প্রখর রোদে দিনমজুর, রিকশাচালক ও ভ্যানচালকদের কাজ করতে হচ্ছে। তাই তাদের মাঝে সুপেয় খাবার পানি, জুস ও স্যালাইন বিতরণ করা হয়েছে। গ্রীষ্মের দাবদাহ চলাকালে কর্মজীবী এসব মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি এ কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে। 

হাসিব আল আমিন/আরএআর