দেলোয়ার হোসেন

নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধরের মামলায় আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলায় মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাতে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লুৎফুল হাবিব রুবেলের মাইক্রোবাসচালক ও সিংড়া উপজেলার ইটালী গ্ৰামের নিতাই সরকারের ছেলে সুজন সরকার (৩২) এবং নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার রায়পুর গ্রামের মনিন্দ্র নাথ প্রামাণিকের ছেলে নিরেন চন্দ্র প্রাং (৪৮)। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার রায়পুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় আহত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ১০ দিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরবেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মুনয়েম আকাশ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাবাকে রিলিজ দিয়েছে, এখন ছাড়পত্রের অপেক্ষায় রয়েছি। আজ বিকেলের মধ্যে বাবাকে নিয়ে সিংড়ার নিজ বাড়িতে ফিরব।

গ্রেপ্তার অপহরণে ব্যবহৃত গাড়ির চালক সুজন সরকার ও সহযোগী নিরেন চন্দ্র প্রাং  

পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। শিগগিরই সবাইকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রসঙ্গত, আসন্ন ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন গত ১৫ এপ্রিল বিকেলে সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন অনলাইনে আবেদনের পর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের প্রতিলিপি জমা দিতে যান। এ সময় সেখানে আগে থেকে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে মারধর করে কালো মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে আবারও বেধড়ক মারধর করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। সেখান থেকে পরিবারের লোকজন নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

এ ঘটনার জন্য ভুক্তভোগীর পরিবার প্রতিপক্ষ প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল ও তার সমর্থকদের দায়ী করে আসছেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার সুমন নামের এক আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন যে লুৎফুল হাবীবের পক্ষ নিয়েই সুমনসহ অন্য আসামিরা দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধর করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় লুৎফুল হাবীবকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দলীয়ভাবেও লুৎফুল হাবীব রুবেলকে শোকজ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এরপর লুৎফুল হাবীব রুবেলের দুলাভাই ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশে লুৎফুল হাবীব রুবেল তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন।

ফলে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে নাটোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ দেলোয়ার হোসেনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন।

গোলাম রাব্বানী/এমজেইউ