নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে নির্বাচনী এলাকার বাইরে সভা করায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হাসানের এক কর্মীকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে গেলে তিন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করেন জামিল হাসানের কর্মী-সমর্থকেরা।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকার সাবাহ গার্ডেনে এ ঘটনা ঘটে। জামিল হাসান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীর বড় ভাই ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

গাজীপুরের সহকারী কমিশনার (নেজারত শাখা) ইশতিয়াক মজনুন ইফতি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শ্রীপুর ও গাজীপুর সদর উপজেলায় নির্বাচন সামনে। শনিবার বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকার সাবাহ গার্ডেনে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে জনসমাবেশ করার খবর পাই। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হাসানের ওই সভা বন্ধ করা হয়। এ সময় তার কর্মী আক্তারুজ্জামানকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ মো. আ. জলিল অভিযোগ করে বলেন, জামিল হাসান নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে বিভিন্ন ধরনের কৌশল নিচ্ছেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি উপজেলা নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন এমন অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে গোপন বৈঠকের আয়োজন করেন।

জানা গেছে, ওই নির্বাচনী সভায় শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, রাজেন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়, মাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, বরমী উচ্চ বিদ্যালয়, তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়, ভাংনাহাটি বালিকা দাখিল মাদ্রাসা, চিনাশুকানিয়া দাখিল মাদ্রাসাসহ প্রায় ৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার প্রধানগণ অংশ নিয়েছিলেন।

এদিকে পেশাগত দ্বায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মাই টিভির গাজীপুর ও শ্রীপুর সদর প্রতিনিধি মাহবুবুল আলম, দৈনিক স্বাধীন বাংলা পত্রিকার প্রতিনিধি রুকনুজ্জামান ও দৈনিক তরুণ কণ্ঠ পত্রিকার প্রতিনিধি মো. নজরুল ইসলাম লাঞ্ছিত হন। মাহাবুবুল আলম অভিযোগ করে বলেন, তথ্য সংগ্রহ ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে জামিল হাসানের কর্মী-সমর্থকরা আমাদের লাঞ্ছিত করে অবরুদ্ধ করে রাখেন। মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করেন।

জয়দেবপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইবরাহিম খলিল বলেন, সাংবাদিক অবরুদ্ধের খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। সাংবাদিকদের সঙ্গে জামিল হাসানের নেতাকর্মীদের কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মামুনুল করিম জানান, বিধি ভঙ্গ করে সভা করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ওই সভায় যে-সব শিক্ষকগণ অংশ নিয়েছেন তাদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল হাসান জানান, নির্বাচনী আচরণ বিধি-৫ মোতাবেক প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে বড় শোডাউন, মিটিং, মিছিল করতে পারবে না। তাই, প্রতীক বরাদ্দ না পেয়ে বড় সভা করায় জরিমানা করা হয়েছে।

শিহাব খান/এএএ