দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে টানা তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা ১৯৯৫ সালের পর দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর আগে সোমবার (২৯ এপ্রিল) ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১৯৯৫ সালের পহেলা মে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই বছরের ২৫শে এপ্রিল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ ডিগ্রি। তবে পূর্বের সেই রেকর্ড ভেঙে আজ ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে প্রচণ্ড রোদে কৃষকের ফল-ফসল ও সবজি বাগান ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এ ছাড়া জেলায় বিভিন্ন সড়কের রাস্তার পিচ গলে যেতে দেখা গেছে। শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালকরা অস্থির হয়ে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষ। জেলার সকল স্কুলকলেজ, কিন্ডারগার্টেনসহ কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গায় বেশ কয়েকজন মুরগী খামারিরা ঢাকা পোস্টকে বলেন, তীব্র গরমে হাজার হাজার মুরগী মারা যাচ্ছে। গ্রাম এলাকার ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে আরও বেশি হুমকির মুখে পড়ছে হচ্ছে। পোল্ট্রি, লেয়ার, কালার বার্ড, সোনালীসহ বিভিন্ন জাতের মুরগী মারা যাচ্ছে গরমে। এতে খামারিদের পথে বসা অবস্থা হয়ে পড়েছে।

চুয়াডাঙ্গা শহরের ইমরান নামের এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, তীব্র গরমে বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। ঘরের মধ্যেও প্রচণ্ড গরম। ফ্যানের বাতাস যেন আগুন হয়ে ঝরছে।

চুয়াডাঙ্গার খুদিয়াখালি গ্রামের কৃষক রাজিব হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গরমে ঘরের বাইরে যাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। আমার দুই বিঘা পানের বরজে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। পানি দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। পান পাতা ছোট হয়ে যাচ্ছে। এই মৌসুমের প্রায় ৫০ হাজার টাকার পান বিক্রি করতাম। তবে এখন আর সম্ভব না।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহা. আতাউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আফজালুল হক/এএএ