শ্যামাসুন্দরী খাল এক দিনে একযোগে পরিষ্কার করার উদ্যোগ
ঐতিহ্যবাহী শ্যামাসুন্দরী খাল পরিষ্কার করাসহ দূষণ রোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে রংপুর সিটি কর্পোরেশন। আগামী শনিবার (১১ মে) একযোগে খালের পাঁচ কিলোমিটার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার মধ্য দিয়ে শ্যামাসুন্দরী পুনরুজ্জীবন ও সচল রাখার কার্যক্রম শুরু হবে। এদিন সকাল ৯টা থেকে একযোগে ১৫টি পয়েন্টে স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠন বিডি ক্লিনের ১ হাজার সদস্যসহ সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শাখার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা খাল পরিষ্কার কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে নগর ভবনের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান।
বিজ্ঞাপন
শ্যামাসুন্দরী খাল রংপুর জেলা প্রশাসনের সম্পত্তি হওয়ায় এটি দখলমুক্ত করার কার্যক্রমসহ বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে নানান প্রতিবন্ধকতা রয়েছে উল্লেখ করে সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, প্রায় ১৫ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং স্থানভেদে ২৩ থেকে ৯০ ফুট প্রশস্ত এই খাল সিটি এলাকার উত্তর পশ্চিমে কেল্লাবন্দস্থ ঘাঘট নদী থেকে শুরু হয়ে নগরীর সব পাড়া-মহল্লার বুক চিরে ধাপ পাশারিপাড়া, কেরানীপাড়া, মুন্সীপাড়া, ইঞ্জিনিয়ারপাড়া, গোমস্তাপাড়া, সেনপাড়া, মুলাটোল, তেঁতুলতলা শাপলা চত্বর, নূরপুর, বৈরাগিপাড়া হয়ে মাহিগঞ্জ সাতমাথা রেলগেট এলাকায় কেডি ক্যানেল স্পর্শ করে খোকসা ঘাঘট নদীতে মিশেছে। এই খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ দূষণমুক্ত রাখতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ১১ মে বিডি ক্লিন (স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠন)-এর মাধ্যমে শ্যামাসুন্দরী খাল একযোগে এক দিনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে।
বিজ্ঞাপন
পরিচ্ছন্নতার সুফল সম্পর্কে নগরবাসীকে বেশি করে সচেতন করতে সবাইকে যার যার জায়গা থেকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মেয়র মোস্তফা বলেন, শ্যামাসুন্দরী খালের আশপাশে বসবাসরত নগরবাসীকে সচেতন হবে। শনিবার (১১ মে) পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের পর শ্যামাসুন্দরী খালে নতুন করে ময়লা ফেলা এবং পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য অবৈধ স্যুয়ারেজ সংযোগ প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে তদারকি কার্যক্রম চলমান থাকবে। প্রয়োজনে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনাসহ অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার নির্বাচনী ইশতেহারে গ্রিন সিটি এবং ক্লিন সিটি ছিল অন্যতম অ্যাজেন্ডা। সেটিকে পূরণ করার লক্ষ্যে শ্যামাসুন্দরী খালকে পুনরুজ্জীবিত করতে বর্তমান পরিষদ বদ্ধপরিকর। তারই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে কোভিড রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি প্রজেক্টের আওতায় শ্যামাসুন্দরী খালের ৫ কিলোমিটার (চেকপোস্ট হতে শাপলা চত্বর) ময়লাযুক্ত মাটি পুনঃখনন ও অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শ্যামাসুন্দরী কেবল রংপুর নয়, সমগ্র বাংলাদেশের জন্যই একটি বড় সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। শ্যামাসুন্দরী খালকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং সৌন্দর্যবর্ধনের যে প্রয়াস চলছে তার সফলতা এবং রংপুরের সকল নাগরিকের সহযোগিতা প্রয়োজন।
এ সময় আগামী তিন মাসের মধ্যে শ্যামাসুন্দরী খাল খনন ও সংস্কারসহ আধুনিকায়নে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রজেক্ট ডিজাইন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করার জন্য চেষ্টা চলছে বলেও জানান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র মাহাবুবার রহমান মঞ্জু, তৌহিদুল ইসলাম, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (সিনিয়র সহকারী সচিব) মাহমুদ হাসান মৃধা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (চ. দা.) মো. আজম আলী, নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আনিচুজ্জামান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান ইবনে তাজসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, বিডি ক্লিনের প্রতিনিধি ও সিটির বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তাবৃন্দ।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমজেইউ