ভারতফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হচ্ছে

ভারতফেরত পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যশোরের ২৯টি আবাসিক হোটেলে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। তবে ভারত থেকে যে সংখ্যক পাসপোর্টধারী যাত্রী ফেরত আসার কথা ছিল তার চেয়ে বেশি যাত্রী ফেরত আসায় জেলার কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রগুলো পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ফেরত আসা যাত্রীদের খুলনা, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ ও নড়াইলে পাঠানো হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভারতের নতুন ধরনের করোনা যাতে বাংলাদেশে ছড়াতে না পারে সেজন্য স্থলপথে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত ১৪ দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এমন অবস্থায় ভারতে আটকেপড়া এক হাজার ২০০ জন যাত্রী দূতাবাসের বিশেষ অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরছেন। এর মধ্যে শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যা পর্যন্ত  যশোরের বেনাপোল হয়ে ৭৫ জন দেশে ফিরেছেন।
এ নিয়ে গত ৫ দিনে ৭৭১ জন বিশেষ ব্যবস্থায় ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন। গত ৫ দিনে যারা দেশে ফিরেছেন তাদের মধ্যে করোনা ‘পজিটিভ’ ব্যক্তি আছে ১৫ জন। তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। 
এছাড়াও গত শনিবার (২৪ এপ্রিল) একজন ও আজ শুক্রবার একজনের মরদেহ দেশে এসেছে। ভারত থেকে ফেরা করোনা নেগেটিভ ব্যক্তিদের বেনাপোল ও যশোর শহরের আবাসিক হোটেল এবং ঝিকরগাছার গাজীর দরগা মাদরাসায় কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। যশোরে এক হাজার ব্যক্তিকে রাখার মতো ব্যবস্থা রয়েছে। যেভাবে ভারত থেকে মানুষ এসেছে তাতে শুক্রবার দুপুরেই যশোরের সব আবাসন পূর্ণ হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি দুপুরে জরুরি সভার আয়োজন করে। সেখানে দুই শতাধিক ভারতফেরত যাত্রীকে যশোরের পার্শ্ববর্তী চারটি জেলায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক ও জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ভারত থেকে যে সংখ্যক পাসপোর্টধারী যাত্রী ফেরত আসার কথা আমরা চিন্তা করছিলাম তার থেকে অনেক বেশি লোকজন আসছে। বেনাপোলের হোটেলগুলো পূর্ণ হয়ে গেছে। ঝিকরগাছা উপজেলার গাজীর দরগাহ এতিমখানা ও মাদরাসার ভবনও পূর্ণ হয়ে গেছে। সেখানে ২০২ জনকে রাখা হয়েছে। যে কারণে ভারত থেকে ফেরত আসাদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে এবার যশোরের পার্শ্ববর্তী জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ ও নড়াইলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সেখ সালাউদ্দিন শিকদার জানান, যে সব স্থানে ভারতফেরত যাত্রীদের রাখা হয়েছে সে সব স্থানে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। ১৪ দিন অবস্থানের পর করোনা নেগেটিভ সনদ প্রাপ্তি সাপেক্ষে এসব যাত্রীদের নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে যেতে দেওয়া হবে।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান বলেন, দেশে ফেরার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আরও এক হাজার ২০০ জনকে বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭৫ জন শুক্রবার ফিরেছেন। যশোরে কোয়ারেন্টাইনের জায়গা সংকট দেখা দেওয়ায় ভারতফেরতদের যশোরের পার্শ্ববর্তী চার জেলায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে নড়াইলের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ১৫০ জনকে সেখানে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছে যশোর জেলা প্রশাসন।
জাহিদ হাসান/আরএআর