সিজারের মাধ্যমে কন্যা শিশুর জন্ম দিয়ে ক্লিনিকের শয্যায় রক্ত শূন্যতায় কাতরাচ্ছিলেন রুনা খাতুন (২৬) নামে এক প্রসূতি মা। ডাক্তার বলছিলেন রক্ত না পেলে বাঁচানো সম্ভব নয়। প্রিয়জনকে বাঁচাতে দিশেহারা হয়ে ছোটাছুটি করছিলেন স্বজনরা। কোথাও রক্তের সন্ধান পাচ্ছিলেন না তারা।

সে সময় টহলরত পুলিশের একটি দল জানতে পারে ‘ও নেগেটিভ’ রক্তের অভাবে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়াই করছেন সদ্য জন্ম নেওয়া এক শিশুর মা। তখনই রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন পুলিশ কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম। জরুরি মুহূর্তে পুলিশ কর্মকর্তা রক্ত দেওয়ায় অশ্রুসিক্ত হন উপস্থিত অনেকেই। সাধুবাদ জানান ডাক্তাররা।

শনিবার (০১ মে) বিকেলে পাবনার ঈশ্বরদী শহরের বকুলের মোড়ের শোভন ক্লিনিকে রোজা রেখে গুরুতর অসুস্থ প্রসূতি রুনা খাতুনকে রক্ত দেন রূপপুর পারমাণবিক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুল ইসলাম। রুনা খাতুন উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের কারিগরপাড়ার সোহরাব আলীর মেয়ে।  

সোহরাব আলী বলেন, মেয়ের সিজার হওয়ার পর রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। কোথাও ও নেগেটিভ রক্ত না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ জানতে পারি রক্তের ব্যবস্থা হয়ে গেছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমার মেয়েকে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। এই ঋণ শোধের ক্ষমতা আমার নাই। আল্লাহ্‌ যেন উনাকে সব সময় ভালো রাখেন।  

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শফিকুল ইসলাম শামিম জানান, সকালে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। ওই মুহূর্তে রক্ত না দিলে তাকে বাঁচানো যেত না। 

এসআই আতিকুল ইসলাম বলেন, একটি মাধ্যমে জানতে পারি যে দাশুড়িয়া এলাকার একজন গৃহবধূর রক্তের প্রয়োজন। খবরটি পেয়েই দুপুরের পর চলে যাই শোভন ক্লিনিকে। সেখানে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে রক্ত দেই। 

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থায় প্রথম রক্ত দান করি। রক্তদাতা সংগঠন বাঁধনের সদস্য হওয়ার কারণে চার মাস হলেই ডাক পড়তো। এবার দিয়ে ১৫ বারের মতো স্বেচ্ছায় রক্ত দান করলাম। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।

রাকিব হাসনাত/আরএআর