দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে গাছে বেঁধে তিন কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার (০২ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটকরা হলেন- উপজেলার রামভদ্রপুর গ্রামের মৃত আজিম উদ্দীনের ছেলে আফজাল হোসেন (৫৫), মহসীন আলীর ছেলে শাকিব বাবু (২৫), আব্দুল হালিমের ছেলে মমিনুল ইসলাম (২৮), মৃত ইউনুস আলীর ছেলে পলাশ হোসেন (২৮) ও জাফরপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে শিপন ইসলাম (২৪)।

ফুলবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফখরুল ইসলাম বলেন, গাছে বেঁধে এক শারীরিক প্রতিবন্ধীসহ তিন কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনায় থানায় দুটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগটি তদন্তের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। রোববার রাতেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় তিনজনসহ মোট পাঁচজনকে আটক করা হয়। অন্যদের আটকে অভিযান চলছে। 

এর আগে শনিবার (০১ মে) দুপুরে ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর বুদ্ধিজীবীর মোড়ে ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে উপজেলার স্লুইচ গেটের বাসিন্দা শারীরিক প্রতিবন্ধী সৈয়দ শামীম হোসেন (১৬), পূর্ব জাফরপুর গ্রামের রাকিবুল ইসলাম (১৫) ও নিশাতকে (১৬) গাছে বেঁধে রড, পাইপ ও লাঠিসোটা দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। চুরির স্বীকারোক্তি নিতে প্রকাশ্যে ইনজেকশনের সিরিঞ্জের সুঁচ তাদের পায়ের তালুতে ফুটিয়ে নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্যাতন শেষে তিন যুবককে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে গেলে তাদের অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

তাদের ওপর নির্যাতন দেখে ওই এলাকার নাঈম (১৪) ও নূর আলম (১৫) পালিয়ে যায়। তারা বর্তমানে নিখোঁজ রয়েছে। পরে রাতে গ্রাম্য সালিসে মাতব্বরা নিখোঁজ হওয়া দুই কিশোরকে তিন দিনের মধ্যে তাদের কাছে হাজির করতে অভিভাবকদের নির্দেশ দেন। তাদের হাজির করতে ব্যর্থ হলে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে ঘোষণা দেন। সালিস শেষে মাতব্বরদের নির্দেশে আহত নিশাদের নানির একটি গাভি এবং নিখোঁজ নূর আলমের বাড়ির থেকে একটি চার্জার ভ্যান নিয়ে যায় মাতবরের লোকজন।

এ ঘটনায় রোববার বিকেলে রামভদ্রপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তাকিম সরকার বাবু মাস্টারসহ আটজনের বিরুদ্ধে থানায় দুটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

মাহাবুর রহমান/আরএআর