ফরিদপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের হামলায় উপাধ্যক্ষ, ছাত্রীসহ ৫ জন আহত
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর স্বেচ্ছাসেবক লীগের হামলায় ফরিদপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উপাধ্যক্ষ, ছাত্রীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজনকে ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর সদরের গঙ্গাবর্দী এলাকার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে ফরিদপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থীরা জানান, আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় কোটা সংস্কারের দাবিতে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এসে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ শুরু করে। দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ১২টা ৪৪ মিনিটে পুলিশ সেখানে গেলে ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে উঠেন এবং পুনরায় সড়কের ওপর উঠে ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’ বলে শ্লোগান দিতে থাকেন। এর পরপরই স্বেচ্ছাসেবক লীগের অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী লাঠি ও লোহার রড নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতর ঢুকে গেলে হামলাকারীরা ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে উপাধ্যক্ষ, দুই ছাত্র এবং দুই ছাত্রীকে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ওই সময় পুলিশ সদস্যরা পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন।
বিজ্ঞাপন
এ হামলায় উপাধ্যক্ষের পায়ে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। আহত দুই ছাত্রীর একজন হলেন পঞ্চম পর্বের ভাবনা আক্তার। আহত অপর ছাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহত দুই ছাত্র হলেন- সপ্তম পর্বের নাফিজ ইসলাম ও পঞ্চম পর্বের অর্ক বিশ্বাস।
আহতদের মধ্যে দুই ছাত্রকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুই ছাত্রীকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সপ্তম বর্ষের শিক্ষার্থী মুনতাসির আলী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলাম। এর মধ্যে আমাদের বাপের বয়সী লোক যারা সকলে হেলমেট পরিহিত রড ও ক্রিকেটের স্ট্যাম্প নিয়ে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে পড়ে। তাদের ঠেকাতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাধ্যক্ষ এ কে এম হাসিবুল হাসান এগিয়ে গিয়ে হামলাকারীদের ঠেকানোর চেষ্টা করেন। হামলাকারীরা উপাধ্যক্ষের পায়ে রড দিয়ে আঘাত করে তাকে সরিয়ে দিয়ে আমাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে।
হামলায় সময় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালনের অভিযোগ অস্বীকার করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান বলেন, পুলিশ হামলাকারীদের হাত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা না করলে আরও অনেক শিক্ষার্থী আহত হতেন। পুলিশই ক্যাম্পাস থেকে হামলাকারীদের হটিয়ে দেয়।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করেছে এ খবর শুনে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছুটে যান। হামলার ব্যাপারে তার কোনও তথ্য জানা নেই।
জহির হোসেন/আরএআর