যশোরের অভয়নগরে ঘোপেরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি এভাবেই দখলমুক্ত করে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা

স্কুল বন্ধ থাকায় অভয়নগরে ঘোপেরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি দখল করে নিয়েছিলেন স্থানীয় একটি মহল। শনিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই মাঠটি দখলমুক্ত করে। পরে তারা মাঠে খেলাধুলা শুরু করে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোকছেদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, চেঙ্গুটিয়া বাজারের আনন্দ চন্দ্র সাহার ছেলে শশীভূষণ সাহা স্কুল নির্মাণের জন্য ৫৮ শতাংশ জমি দান করেছিলেন। সেই জমির পাঁচ শতাংশ জাল দলিলের মাধ্যমে ইকরামুল কবীর দখল করে নেয়। শনিবার দুপুরে স্কুলের সামনের সড়কে খেলার মাঠ দখলমুক্ত করার দাবিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বর্তমান শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করে।

পরবর্তীতে যশোর-খুলনা মহাসড়কের চেঙ্গুটিয়া বাজারে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে আবারও মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ করে তারা। এ সময় বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল। এর কিছুক্ষণ পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী স্কুল মাঠের অবৈধ দখল (টিনের প্রাচীর) ভেঙে ফেলে। পরে দখলমুক্ত মাঠে  শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা শুরু করে।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা রিতা পোদ্দার বলেন, ১৯২৮ সালে স্থানীয় আনন্দ চন্দ্র সাহার ছেলে শশীভূষণ সাহার দান করা ৫৮ শতাংশ জমিতে বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ গড়ে ওঠে। সেই থেকে প্রায় ৯২ বছর ধরে শিক্ষার্থীরা এ মাঠে খেলাধুলা ও জাতীয় অনুষ্ঠান করে থাকে। স্কুল বন্ধের সুযোগে স্থানীয় একটি মহল খেলার মাঠের মাঝখানে পাঁচ শতাংশ জমি অবৈধভাবে দখল করে নেয়। তারা রাতের আঁধারে সেই জায়গায় টিনের প্রাচীর নির্মাণ করে। এ ব্যাপারে শুক্রবার (১ জানুয়ারি) ‘স্কুলের মাঠে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ প্রসঙ্গে’ যশোর জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খানের কাছে লিখিত অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এ সময় ৫৮ শতাংশ জমির প্রত্যয়নপত্রও দেয়া হয়েছে।

 অভয়নগরে ঘোপেরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন

ঘোপেরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তপু বলেন, এটা আমাদের খেলার মাঠ। এখানে কেন টিনের বেড়া দেয়া হবে। আমাদের বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে কোনো বেড়া থাকতে দেব না। আমাদের খেলার মাঠ দখল করলে আমরা খেলব কীভাবে?

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইকরামুল কবীরের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ২০২০ সালে জাহান আলী বিশ্বাস, আব্দুল মতিন বিশ্বাস, শাহীদুজ্জামান শাহিন, শাসছুন্নাহার, মনোয়ারা ও আনোয়ারা খাতুনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকায় পাঁচ শতাংশ জমি ক্রয় করেন তিনি। যার সকল কাগজপত্র তার কাছে আছে। স্কুলের খেলার মাঠ অবৈধভাবে দখলের বিষয়টি সত্য নয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  নাজমুল হুসেইন খান বলেন, অভয়নগরে ঘোপেরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ উদ্ধারের দাবিতে শনিবার দুপুরে স্কুলের সামনের সড়কে প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বর্তমান শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী স্কুল মাঠের অবৈধ দখল (টিনের প্রাচীর) ভেঙে ফেলে। পর দখলমুক্ত মাঠে খেলাধুলা শুরু করে শিক্ষার্থীরা। উভয় পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেছি। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি। 

এসপি