বরগুনা সদর উপজেলার এক প্রকৌশলীকে মারধর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মে) বিকেলে নিজ কার্যালয়ের সামনে স্থানীয় ঠিকাদার মো. ফরহাদ জমাদ্দার তাকে মারধর করেন। তবে ঘটনার পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

মারধরের শিকার ওই ব্যক্তির নাম মো. মিজানুর রহমান। তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী পদে কর্মরত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিজ কার্যালয়ে সামনে মোটরসাইকেলে বসা ছিলেন প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান। এ সময় ঠিকাদার ফরহাদ জমাদ্দার তাকে ঘুষখোর বলে গালাগাল দিতে থাকেন। পরে এর প্রতিবাদ করলে ঠিকাদার তাকে মোটরসাইকেলে লাথি মেরে ও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এরপর মিজানুর রহমান উঠে দাঁড়ালে ফরহাদ জোমাদ্দার তাকে কিল-ঘুষি মেরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।

এ সময় ঘটনাস্থলে সদর উপজেলা পরিষদের ও উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মচারীরাসহ সদর উপজেলার বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা পরিস্থিতি শান্ত করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম আহমদ সোহাগ বলেন, উপজেলা পরিষদে আমাদের একটি মিটিং ছিল। মিটিং শেষ করে ভবন থেকে নামার সময় আমরা দেখি মারামারি করছেন তারা। পরে আমিসহ সেখানে আরও বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলাম। পরে আমরা পরিস্থিতি শান্ত করি। তবে কী নিয়ে ঘটনা ঘটেছে, তা তিনি জানেন না।

এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. ফরহাদ জমাদ্দার বলেন, প্রকৌশলী মিজানুর রহমান একজন অসৎ কর্মকর্তা। ঘুষ ছাড়া তার কলম চলে না। ঘুষের জন্য তিনি আমার জামানতের টাকা আটকে রেখেছেন। বরগুনার অনেক ঠিকাদারের টাকা তিনি আটকে রেখেছেন আবার অনেকে ঘুষ দিয়ে জামানতের টাকা পেয়েছেন। আমি ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় তিনি আমার কাজ করবেন না। এ জন্য আমি তাকে মেরেছি। পরে আবার তার পা ধরে মাফ চেয়েছি।

এ ছাড়া তিনি দাবি করে বলেন, ঘুষ-বাণিজ্যের মাধ্যমে বরগুনার আমতলী পাড় এলাকায় মিজানুর রহমান বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে এ প্রকৌশলী অঢেল সম্পত্তি গড়েছেন বলেও অভিযোগ এই ঠিকাদারের।

মো. মিজানুর রহমানের দাবি, ফরহাদ জমাদ্দার তার এলাকার বড় ভাই। কিছু ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি বরগুনার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস কে আরিফুল ইসলাম।

বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। একজন সরকারি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনা সহ্য করার মতো নয়। এ বিষয়ে আমি এখনই খোঁজ নিচ্ছি।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তরিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা আমি অবগত নই। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

মো. সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এনএ