চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল পড়ে আছে আইসিইউ বেড

নানা সমস্যায় জর্জরিত ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল। জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই হাসপাতালটিতে নেই পর্যাপ্ত জনবল। মহামারি করোনাার এই সংকটেও এখানে নেই আইসিইউয়ের ব্যবস্থা। তিনটি আইসিইউ বেড বরাদ্দ পাওয়া গেলেও কবে নাগাদ রোগীরা এর সুবিধা পাবেন তা বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও দুই বছরের বেশি সময় ধরে হাসপাতালের ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।  

জানা গেছে, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল সংকট রয়েছে। অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা পরিবেশে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। মাত্র ৩০টি বেডের বিপরীতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে দেখা দেয় বেড সংকট। রয়েছে অক্সিজেনের স্বল্পতাও।  করোনা ওয়ার্ডে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে তখন রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। ওয়ার্ডটি পরিচ্ছন্নতাকর্মী সংকটে অপরিচ্ছন্ন থাকে। ওয়ার্ডের বাথরুমও নোংরা।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হাবিব উল করিম বলেন, হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় করোনা রোগীদের জন্য তিনটি আইসিইউ বেড রাখার জায়গা মিললেও কবে নাগাদ রোগীরা এর সুফল পাবেন তা বলা যাচ্ছে না। আইসিইউ বেডে সার্বক্ষণিক অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আইসিইউ সেবার জন্য দক্ষ চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর সংকট রয়েছে। এই সমস্যা সমাধান হলে রোগীদের আইসিইউ সেবা দেওয়া সম্ভব বলে জানান হাসপাতালের এই কর্মকর্তা।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের ৬৫টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ৪৬ জন, ১৯টি পদ শূন্য। শূন্য পদের মধ্যে রয়েছে রেডিওলজিস্ট, সিনিয়র কনসালটেন্ট যথাক্রমে গাইনি, কার্ডিওলজিস্ট, ইএনটি, জুনিয়র কনসালটেন্ট যথাক্রমে চক্ষু ও প্যাথলজিস্ট। দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পদ পূরণে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল আরএমও ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, হাসপাতালে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল অবস্থায় পড়ে থাকলেও তা মেরামত না হওয়ায় রোগীরা এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে ৬০টি। এর মধ্যে ৩০টি করোনা আক্রান্ত রোগী এবং বাকি ৩০টি করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের জন্য। অক্সিজেন স্বল্পতা ও রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের। লোকবল সংকটের কারণে করোনা ওয়ার্ড পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হয় না। 

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতেও চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় লোকবল সংকট রয়েছে। হাসপাতালে সিজার করার জন্য কোনো কনসালটেন্ট ও অ্যানেস্থেসিয়া নেই। আগে জনবলের সমস্যা নিরস করতে হবে। এছাড়া ঔষধ ও অন্যান্য লজিস্টিক সমস্যাতো আছেই। সব উপজেলাতে এক্সরে মেশিন আছে কিন্তু টেকনিশিয়ান নেই। আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বার বার অবগত করেছি। বাকি কিছু নিয়োগ প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে এখনো করোনা চিকিৎসা শুরু হয়নি। জেলা সদরে যখন করোনার কভার দেওয়া যাবে না, তখন উপজেলাগুলোতে করোনার চিকিৎসাসেবা শুরু করা হবে।

শরীফুল ইসলাম/আরএআর