তানিশা ইসলাম তিশা

গত বুধবার (০৫ মে) ছিল তানিশা ইসলাম তিশার ১১তম জন্মদিন। জন্মদিনে বড় বোন শ্বশুরবাড়ি থেকে আসেনি। রাতে শুভেচ্ছাও জানায়নি। এ নিয়ে বোনের ওপর রাগ করেছিল সে। ঈদে লেহেঙ্গা কিনে দেওয়ার আবদার পূরণের শর্তে রাগ ভাঙে তার। ছোট বোনের আবদার পূরণ করতে বৃহস্পতিবার (০৬ মে) বিকেলে বড় বোন লেহেঙ্গা নিয়ে আসেন। কিন্তু সেই লেহেঙ্গা আর পরা হলো না। তার বদলে সাদা কাপড় পরে ঈদের আগেই চিরবিদায় নিল তানিশা।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে নিজ বাড়ির ছাদে নির্মমভাবে খুন হয় তানিশা। সে ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের আলী আহাম্মেদ ভুঞা বাড়ির সৌদি প্রবাসী শহিদুল ইসলামের ছোট মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাড়ে ৮টার দিকে তানিশাকে বাসায় দাদির কাছে রেখে তার মা ও বড় বোন পাশের বাড়ি যান। তার একমাত্র ভাই বাড়ির পাশে মসজিদে এতেকাফে ছিল। ঘণ্টা দেড়েক পর বাড়ি এসে তানিশাকে না পেয়ে তার মা ছাদের দিকে যান। সেখানে যেতেই সিঁড়ি ঘরের মেঝেতে মেয়ের গলা কাটা মরদেহ দেখতে পান তিনি। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে এক জোড়া স্যান্ডেল পায়। সেই স্যান্ডেলের সূত্র ধরেই তানিশার চাচাতো ভাই নিশানকে (১৭) আটক করা হয়। সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

শুক্রবার (০৭ মে) ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকেল ৩টার দিকে তানিশার মরদেহ বাড়িতে আনা হলে আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। আশপাশের গ্রাম থেকে মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় জমায়। বিকেল ৪টায় মসজিদে নূর জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে আলী আহম্মদ ভূঞা বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনএম নূরুজজামান জানান, ঘটনাস্থল থেকে নিশানের স্যান্ডেল পাওয়ায় তাৎক্ষণিক তাকে বাড়ি থেকে আটক করা হয়। ঘটনার পর থেকে এখনো তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সে ঘটনায় জড়িত কিনা সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ঘটনা সম্পর্কে নিশান এলোমেলো তথ্য দিচ্ছে। সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হবে। 

এদিকে ঘটনাটি তদন্তে সিআইডি ও পিবিআই কাজ করছে। ঘটনার পর পুলিশ বেশ কিছু তথ্য ও আলামত সংগ্রহ করেছে। 

হোসাইন আরমান/আরএআর