বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা

নতুন বছরে নতুন বই পায়নি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সদরের অভ্যন্তরের বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় সদ্য জাতীয়করণকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।

বই নিতে এসে খালি হাতে ফিরে যাওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। ওই প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের পর সুপারিনটেনডেন্ট পদের দাবি নিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে দুটি গ্রুপের জন্ম হয়। এরপর দুইপক্ষের দলাদলি আর কোন্দলে বির্পযস্ত হয়ে পড়ে শিক্ষাসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম।

অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানায়, বই দেওয়ার কথা বলে মাদ্রাসার একটি পক্ষের সহকারী সুপার শাহানুর আলমসহ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে পুরাতন বই সংগ্রহ করেন।

শনিবার (০২ জানুয়ারি) ও শুক্রবার (০১ জানুয়ারি) সকালে শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় বই নিতে আসলে তাদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তারা জানায় বই পাওয়া যায়নি।

শনিবার সকাল ১১টায় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা গেছে, নতুন বই নেওয়ার জন্য বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী অপেক্ষা করছে। অনেকে কাঁদছেন। অভিভাবকরা রেগে কর্তৃপক্ষের কাছে জবাব চাইছেন।

বই না পেয়ে বিষন্ন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিপন বলেন, অনেক অপেক্ষার পর নতুন বই নিতে এসেছিলাম। 

নতুন বছরে বই না পেয়ে হতাশ সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী একরামুল হক বলেন, এমনিতে করোনার কারণে মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় পড়াশুনা করতে পারিনি। বাড়িতে পড়ব, এখন আর উপায় থাকল না।

অভিভাবক মোফাজ্জল হোসেন ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, প্রথমদিন আমার মেয়ে বই না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যায়। বাড়ি ফিরে কান্নাকাটি করছিল। আজ আমি নিজে এসেছি।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের এক পক্ষের সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট  শাহানুর আলমের মুঠোফেনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও কোনো সারা পাওয়া যায়নি।  

অন্য পক্ষের সুপারিনটেনডেন্ট  আমিনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের নতুন বইয়ের চাহিদা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বই পাওয়া যায়নি।  

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হাই বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে দুই ব্যক্তি সুপারিনটেনডেন্ট পদের দাবিদার। এ কারণে প্রকৃত সুপারিনটেনডেন্ট নির্ধারণে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে দাখিল করতে দুই পক্ষকে বলা হয়েছে। এতে তারা ব্যর্থ হলে আমি নিজেই শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করব।

কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শামছুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে দুই ব্যক্তি সুপারিনটেনডেন্ট পদের দাবিতে কোন্দল চলছে। তাছাড়াও ১ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত বই বিতরণের সময় রয়েছে। আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি ৭ জানুয়ারি সেখানে নিজেই বই বিতরণ করবেন।

এমএসআর