‘৮ বছর ধরে এক চালার ঘরে থাকি। ঘরের চারপাশ ও চালায় ফুটোর অভাব নেই। বৃষ্টি হলে ফুটো দিয়ে পানি পড়ে। সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে পড়ি রাতের বৃষ্টিতে। তখন আর শুয়ে থাকা যায় না।’এভাবেই অশ্রুসিক্ত নয়নে কথাগুলো বলছিলেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের রতি বালা মজুমদার (৬১)। 

স্বামী মতিলাল মজুমদারকে (৭৫) নিয়ে থাকেন এক চালা ঘরে। ছেলেরা বিয়ে করে যে যার মতো সংসার করছেন। তারা বৃদ্ধ বাবা-মায়ের খোঁজ-খবর রাখেন না। 

বৃদ্ধার স্বামী মতিলাল মজুমদার বলেন, আগে রোজগার করে সন্তানদের নিয়ে ভালোভাবেই জীবন কাটতো। আজ ৮ বছর ধরে আমরা এই ঘরে থাকি। ছেলেরাও দেখে না সমাজের কেউ পাশে আসে না। শরীরে শক্তি থাকলে মানুষের কাছে হাত পাততাম না। অন্যের কাছে চেয়ে খাইতে খুব কষ্ট লাগে। 

স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রিপন মজুমদার বলেন, রতি বালা মজুমদার ও মতিলাল মজুমদারের ৩ সন্তান। তারা কেউ তাদের খোঁজ-খবর রাখে না। এক চালার ঘরে খুব মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বর্ষাকালে ঘরে থাকার সুযোগ থাকে না। মাঝরাতে বৃষ্টি হলে না ঘুমিয়ে বসে থাকতে হয় তাদের। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে উনাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হতো। 

রতি বালা মজুমদারের প্রতিবেশী রুদ্র প্রতাপ বলেন, পরিবারটি খুবই অসহায়ভাবে দিনযাপন করছে। ভাঙা এক চালার ঘরে বসবাস করে, যা অমানবিক। সমাজের বিত্তবানরা যদি তাদের সহযোগিতা করেন তাহলে পরিবারটির মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে।

চরহাজারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা বলেন, রতি বালা মজুমদার ও মতিলাল মজুমদার দম্পতির ছেলেদর অবহেলায় তারা এক চালা ঘরে থাকেন। আমি ইউএনও স্যারকে বিষয়টি জানাব। সরকারিভাবে কিছু করতে পারলে আমি নিজেও খুশি হব।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জিয়াউল হক মীর বলেন, রতি বালা মজুমদার ও মতিলাল মজুমদার দম্পতির কথা জেনেছি। তারা একেবারেই ভূমিহীন ও ঘরহীন। সামনে যে ঘরগুলোর বরাদ্দ আসবে সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের স্থান দেওয়া হবে। 

হাসিব আল আমিন/এসপি