‘নিজের একটা ঘর নাই, ঈদে পরার কাপড় নাই, খাবার নাই, ঈদ আসলে  কী করমু। পরিবারের লগে থাহনের লিগা একটা ঘর দরকার। সারা দিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি। আমাগো আবার কিসের ঈদ। আমাগো সব দিন সমান।’

এভাবেই নিজের কষ্টের কথাগুলো বললেন সত্তর বছর বয়সী শারীরিক প্রতিবন্ধী ইয়াসিন খান।

শারীরিক প্রতিবন্ধী ইয়াসিন খান স্ত্রী রওশন আরাকে নিয়ে চাঁদপুর শহরের কালীবাড়ি রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে থাকেন। তার একটা মেয়ে আছেন। তাকে বিয়ে দিয়েছেন অনেক কষ্টে। এখন স্বামী-স্ত্রী একা থাকেন। ভিক্ষা করে যা পান, তা-ই দিয়ে জীবন চলে তাদের।

ইয়াসিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জীবনে কত ঈদ গেছে রাস্তায় রাস্তায়। সব দিনের মতোই কাটে ঈদের দিন। এইবার নতুন কোনো শাড়ি-লুঙ্গি কেউ দিল না। জেলা প্রশাসন থেকে শুধু সেমাই-চিনি পেয়েছি। এই দিয়ে কি আর ঈদ হয়? একটা হুইলচেয়ার আছে, সারাদিন এদিক-সেদিক ঘুরি। ২০০-৩০০ টাকা পাই। কোনো কোনো দিন ১০০-১৫০ টাকা পাই। এই টাকা থেকে মেয়েকেও দিতে হয়। আল্লাহ ছাড়া আমাগো দেখার কেউ নাই।

সরকার যদি একটা ঘর দিত, বাকি জীবনডা শান্তিমতো থাকতে পারতাম বলে ইয়াসিন খান আক্ষেপ করে বলেন, বাপগো, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাঁটাচলা আর কথা কইতে পারি না। আল্লাহ ভালো রাখলে নিজের একটা ঘর হইতো। প্রতিবন্ধী ভাতা পাই, কিন্তু তা দিয়ে কি আর জীবন চলে? সরকারের কাছে আমার একটাই আবদার, আমারে যেন একটা ঘর দেয়।

একই আকুতি জানান শহরের চৌধুরী ঘাট এলাকার তাজুল ইসলাম (৫৫) ও সদরের কামাল মিজি (৫০)। তারা বলেন, ঈদের চেয়ে বেশি খুশি হতাম যদি একটা ঘর পাইতাম। ঘর নাই, ঈদের জামা নাই, পোশাক নাই, কিসের আবার ঈদ?

শরীফুল ইসলাম/এনএ